December 22, 2024
আঞ্চলিক

পাইকগাছায় প্রভাবশালী ঘের মালিকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর জমি জবর-দখলে রাখার পায়তারা

পাইকগাছা প্রতিনিধি

পাইকগাছায় প্রভাবশালী এক ঘের মালিকের বিরুদ্ধে ৫শ বিঘা আয়তনের ঘেরে এলাকাবাসীর দেড়’শ বিঘা জমি জবর-দখলে রাখার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য হয়ে থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষে পৌছালেও ঘের মালিক নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জমির মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে বলে জমির মালিকরা দাবী করেছেন। এ ব্যাপারে এমপি সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় জমির মালিকরা।

স্থানীয় জমির মালিকরা জানান, লতা ইউনিয়নের শামুকপোতা মৌজায় ৫শ বিঘা আয়তনের একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। ঘেরটি জনৈক রফিকুল সরদার নামে এক ঘের ব্যবসায়ীর নিকট লীজ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ৩০ পৌষ যার মেয়াদ শেষ হয়। উক্ত ঘেরের মধ্যে শামুকপোতা গ্রামের জয়ন্ত সরকার, মদন সরকার, অযোদ্ধা সরকার, অরবিন্দু সরকার, পরিমল ও পবিত্র সরকার সহ এলাকার অর্ধশত ব্যক্তির দেড়’শ বিঘা জমি রয়েছে। রফিকুল ইসলামের মেয়াদান্তে পথিমধ্যে মোস্তফা গাজী নামে এক ব্যক্তি রফিকুলের নিকট থেকে চিংড়ি ঘেরটি সাবলীজ নেয়। পরবর্তীতে হারির টাকা নিয়ে তালবাহানা করলে স্থানীয় জমির মালিকদের মধ্যে মোস্তফা গাজীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ফলে জমির মালিকরা হারির টাকা আদায়ে ২৩/৮/১৯ তারিখ মোস্তফা গাজীর বিরুদ্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু’র নিকট লিখিত অভিযোগ করে। তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু নিষ্পত্তির জন্য সংসদ সদস্য বিষয়টি লতা ইউপি চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মন্ডলের ওপর দায়িত্ব অর্পন করেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দু’পক্ষকে নিয়ে দুই দফা বসাবসি করার পর মোস্তফা গাজী সাড়া না দেওয়ায় পরিষদের পক্ষ থেকে জমির মালিকগণকে জমির আইল সীমানা নির্ধারণের পরামর্শ দেন। ২২ জানুয়ারী পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে এলাকাবাসী জমির আইল সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে ঘের মালিক মোস্তফার লোকজন বাঁধা দেয় এবং এলাকাবাসীর ওপর চড়াও হয়ে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী ঝাড়– মিছিল করলে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ওই খানেই মোস্তফার ভাই বাক্কার গাজীর সাথে বৈঠক করলে ঘের মালিকের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীর প্রাপ্য জমি বের করে দিতে সম্মত হয়। পরবর্তীতে ঘেরের বাসায় বসে ইউপি চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে শালিশী বৈঠক করলে বৈঠকে উভয় পক্ষ নিষ্পত্তির লক্ষে পৌছায় এবং সে অনুযায়ী রোববার চ‚ড়ান্ত আইল সীমানা নির্ধারণ পূর্বক বাঁধ দিয়ে স্থানীয় জমির মালিকদের প্রাপ্য জমি পৃথক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে জমির মালিক জয়ন্ত সরকার জানান, নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বাঁধ দেওয়ার একদিন আগেই মোস্তফা গাজী গংরা আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে। এছাড়া মোস্তফা গংরা জোরপূর্বক আমাদের প্রাপ্য জমি তার দখলে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরণের পায়তারা করার পাশাপাশি আমাদেরকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে এধরণের অস্বীকার করে ঘের মালিক মোস্তফা গাজী জানান, আমি এলাকার লোকজনের যে প্রাপ্য জমি রয়েছে তা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সুব্রত গংদের ১২ বিঘা জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ডিসিআর’এর একটি জমি রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত জমি আমার অনুক‚লে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলার আদেশ হলে পরবর্তীতে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *