November 30, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

পাইকগাছায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি

পাইকগাছা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে পাইকগাছার নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইছে। থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হতে দেখা গেছে। দুপুরের জোয়ারের পানির প্রবল স্রোতে দেলুটির চকরি-বকরি প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে এবং রাড়ুলীর মালোপাড়ার বাঁধ উপচে এ দুই ইউনিয়নের অংশ বিশেষ তলিয়ে গিয়ে মৎস্য ও কৃষি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মেরামত করার চেষ্টা করছে। এদিকে উপজেলার নদীবেষ্টিত ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। রাতের জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে কিংবা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরের জোয়ারের প্রবল স্রোতে ইউনিয়নের ২০নং পোল্ডারের চকরি-বকরি প্রতিরক্ষা বাঁধের পূর্বের স্থান থেকে পুনরায় ভেঙ্গে যায়। এতে বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভাটার সময় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এলাকাবাসী ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করে। এই এলাকার ৫ কিলোমিটার সহ ইউনিয়নের ১৩ কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
লতা ইউপি চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মন্ডল জানান, অত্র ইউনিয়নে প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মান্নান গাজী জানান, সোলাদানা ইউনিয়নের ২৩নং পোল্ডারের পাটকেল পোতা, আমুড়কাটা স্লুইচ গেট, নুনিয়াপাড়া, বাসাখালী ও পতন, বেতবুনিয়া ও সোলাদানার আবাসন এলাকার আঁধা কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান, লস্কর ইউনিয়নের ১০/১২নং পোল্ডারের ভরেঙ্গা স্লুইচ গেট, বাইনতলা গেট, আলমতলা গেট, আলমতলা দক্ষিণ বিলের গেট জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীরের ঘের সংলগ্ন এলাকার বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাইনতলা খেয়াঘাট থেকে কড়ুলিয়া সানা বাড়ী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বিশ্বাস জানান, গড়ইখালী ইউনিয়নের ১০/১২নং পোল্ডারের কুমখালীর ফকিরবাড়ী সংলগ্ন, গাংরখী ও শান্তা স্লুইচ গেট এলাকার ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান জানান, গদাইপুর ইউনিয়নের বয়রা, বাইসারাবাদ, হিতামপুর ও পুরাইকাটী এলাকার আঁধা কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ গোলদার জানান, রাড়ুলী ইউনিয়নের ৯নং পোল্ডারের মালোপাড়া ও ভড়ভুড়িয়ার গেট এলাকার ১ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে দুপুরের কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানি উপচে মালোপাড়া তলিয়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও মেরামত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সাথে কথা বলা সম্ভব নয় বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোতাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। থানার ওসি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে তাদেরকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পূর্বেই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ইতোমধ্যে প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে জরুরী মেরামত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ মজুদ রয়েছে এবং বেড়িবাঁধ টেকসই করার জন্য জাইকাসহ অনেক উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা জানান।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *