পাইকগাছার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা সব সময় উন্নয়ন বঞ্চিত : এলাকার নাম দীঘা
আবুল হাশেম, পাইকগাছা
পাইকগাছার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলো দেশ স্বাধীনের পর প্রত্যেক সরকারের সময় উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েছে। যাদের ভোট ব্যাংকের উপর ভিত্তি করে একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে নামলেও নির্বাচন পরবর্তীতে তাদের বেমালুম ভুলে যান নির্বাচিত ব্যক্তিরা। তবে বর্তমান সাংসদ কি করেন, এটাই দেখার অপেক্ষায় হিন্দু স¤প্রদায়ের অবহেলিত পাইকগাছার সোলাদানা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের জনগণ।
এ ক্ষেত্রে পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউপির আমুরকাটা বাজার হতে চারবান্ধা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার দীঘা গ্রাম। যেখানে শতভাগ জনগণ হিন্দু।কিন্তু অবাক হলেও কিছু বলার নাই,কারণ গ্রামটির চলাচলের রাস্তাটি যেমন জরাজীর্ণ তেমন বিদ্যুৎ বিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন।উক্ত গ্রামটিতে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার কোন এজেন্ট না দিলেও ৯৯ ভাগ ভোট নৌকায় পড়ে। অথচ হিন্দু বা আওয়ামী অধ্যুষিত এলাকায় উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগে না। ইতিপ‚র্বে সকল নির্বাচন প‚র্ববর্তী সময়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর বেমালুম ভুলে গিয়েছিল রাস্তাটির সংস্কার বা মেরামত ও বিদ্যুৎ সসংযোগের কথা। ফলে দীঘার রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও কাদা মাটিতে পরিনত হলে চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয় শিক্ষার্থী সহ হাজার হাজার জনগণ। সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় পাইকগাছার সোলাদানা ইউপির আমুরকাটা বাজার হতে চারবান্ধা পর্যন্ত ২ কিলোমিটার দীঘা গ্রামের রাস্তা ইটের সলিং ও কাঁচা রাস্তা। রাস্তাটির ইটের সলিং সরে শতশত গর্তে পরিণত হয়েছে। উক্ত সলিংয়ের রাস্তা ও কাঁচা রাস্তার গর্তগুলোয় বর্ষা মৌসুমে পানি জমে কর্দমাক্তে পরিণত হয়।গ্রামে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী আমুর কাটা গ্রামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গ্রাম হতে শত শত ছেলে মেয়ে বিদ্যালয় দুটিতে যাতায়াত করে।হিন্দু অধ্যুষিত দীঘা গ্রামটির যেমন রাস্তার বেহাল দশা, তেমনি বিদ্যুৎ না থাকায় উভয় সংকটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।ডিজিটাল বাংলাদেশে আজও হারিকেন জালিয়ে লেখা পড়া করতে হচ্ছে দীঘা গ্রামের শিক্ষার্থীদের। আবার বর্ষা মৌসুমে বই খাতা ভিজে কাদা মাটি মেখে তাদেরকে আসা যাওয়া করতে হয়। এছাড়া উক্ত এলাকায় রয়েছে চিংড়ি চাষের একাধীক মৎস্য লীজ ঘের। ভাংগাচুরা রাস্তার কারণে বাগদা, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহের জন্য কোন যানবাহন দীঘা গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে বাগ অথবা মাথায় করে মাছ বহন করতে হয়। যা উক্ত উক্ত এলাকার লোকজন অত্যন্ত ঝুকির মধ্যে পড়ে । আবার রুটি-রুজি আয়ের জন্য শতশত মটরসাইকেল জীবন বাজী রেখে চলাচল করে এই ভঙ্গুর রাস্তা দিয়ে। যা প্রতিনিয়ত তাদেরকে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতি ইউপি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প‚র্বে প্রার্থীরা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বারংবার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রাস্তাটির কথা আর করোর খেয়াল থাকে না। জনৈক কৃষ্ণপদ মন্ডল বলেন, আমাদের এই এলাকা আওয়ামী অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার ৯৯% ভোটার নৌকায় ভোট দিয়ে থাকে। আমাদের কাঙ্খিত দলটি দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা স্বত্তে¡ও এই রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি।তবে আশা করছি বর্তমান সাংসদ আক্তারুজ্জামান বাবু আমাদের দিকে তাকাবেন এবং উন্নয়ন বঞ্চিত রাস্তাটি সংস্কার ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করবেন। ইউপি সদস্য রাজেশ মন্ডল বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা বর্ষা মৌসুমে স্কুল-কলেজে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেয়। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের ল্যাম্প বা হারিকেনের আলোয় পড়াশুনা করতে হয়।বাংলাদেশের কোথাও এমন অবহেলিত এলাকা আছে বলে আমি মনে করি না। অথচ আমরা জন্ম সুত্রে নৌকার ভোটার। তবে আমরা গত নির্বাচনে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। বাবু ভাই প্রার্থী হওয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত বদল করি। আশা করছি আওয়ামীলীগের পরিক্ষিত সৈনিক আক্তাজ্জামান বাব এমপি হয়েছে। তার ভোট ব্যাংক এলাকার উন্নয়ন হবেই।
গোবিন্দ মন্ডল বলেন, গত ১০ বছরে আমাদের ভোটে নির্বাচিত সদস্যরা ফিরে তাকায় নি তবে বাবু ভাই এমপি হয়েছে রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে আর জরাজীর্ণ থাকবে না এবং ধান্য ও মৎস্য মৌসুমে আমাদেরকে আর বেশি কষ্ট করা লাগবে না। এলাকার শতশত লোকজন রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ও প্রধান মন্গ্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।পাশাপাশি হিন্দু স¤প্রদায় অধ্যুঢিত এলাকার জনগণ বর্তমান সাংসদ তারুণ্যের প্রতীক আক্তারুজ্জামান বাবুর উপর প‚র্ণ আস্তা আছে বলে জানিয়েছেন।