পাইকগাছার অবৈধ মৎস্য মার্কেটের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশ
পাইকগাছা প্রতিনিধি
পাইকগাছা পৌর অভ্যন্তরে অবৈধ মৎস্য মার্কেটের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন খুলনা জেলা প্রশাসক। এ দিকে জেলা প্রশাসকের এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যবসায়ী বজলুর রহমান গংরা মার্কেটের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের বন্ধের নির্দেশনা দ্রæত বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন পুরাতন মৎস্য আড়ৎদারী মার্কেটের ব্যবসায়ীবৃন্দ।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, মৎস্য অধ্যুষিত পাইকগাছা পৌরসভার শিবসা ব্রীজ সংলগ্ন বাতিখালী এলাকায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পাইকগাছা মৎস্য আড়ৎদারী সমবায় সমিতির অনুক‚লে আধুনিকমানের একটি আড়ৎদারী মার্কেট রয়েছে। সমবায় দপ্তর থেকে নিবন্ধিত আড়ৎদারী সমিতির ব্যবসায়ীরা নিজেদের সম্পত্তির উপর মার্কেট নির্মাণ করে পৌরসভা সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে আড়ৎদারী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অত্র মার্কেটে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মৎস্য ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। এদিকে সম্প্রতি মার্কেটের বহিষ্কৃত ব্যবসায়ী বজলুর রহমান শিববাটী সড়কের পাশে কৃষি জমি ভরাট করে সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই আড়ৎদারী মার্কেট নির্মাণ করে। মার্কেটের কার্যক্রম শুরু মুহূর্তে পুরাতন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পৌর মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করে। দু’পক্ষের শুনানীন্তে বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় নবনির্মিত অবৈধ মৎস্য মার্কেটের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন ইউএনও। স্থানীয় প্রশাসনের এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যবসায়ী বজলুর রহমান গংরা একদিকে মার্কেটের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে, অপর দিকে অনুমোদন চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) পাইকগাছা, খুলনাকে নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা মোতাবেক সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম ইউএনও জুলিয়া সুকায়নার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বজলুর রহমান গাজী শিবেরবাটী মৌজার বি,আর,এস ২৩,৫৭,৬০ ও ১২৮ নং খতিয়ানের ০.৬০ একর জমিতে ৪০টি দোকান ঘর নির্মাণ করেছে। মৎস্য অধিদপ্তর, পৌরসভার লাইসেন্স এবং ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ব্যতি রেখে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়াই কৃষি জমির উপর অবকাঠামো তৈরী করে আড়ৎদারী ব্যবসা পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছে। অপরদিকে মার্কেটে কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় পাইকগাছা মৎস্য আড়ৎদারী সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে অবৈধ মার্কেটের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর পৃথক দুটি আবেদন করে। যার একটিতে জেলা পুলিশ সুপার অনুসন্ধান পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশনা দেন।
অপর অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে খুলনা জেলা প্রশাসক অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত মৎস্য মার্কেটের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা দেন। পুরাতন আড়ৎদারী সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার জানান, ব্যবসায়ী বজলুর রহমান প্রশাসনের কোন নির্দেশনাকে তোয়াক্কা করছে না। এর আগে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনাও অমান্য করেছে। সর্বশেষ জেলা প্রশাসক মহোদয় মার্কেটের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। এ নির্দেশনাও অমান্য করে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আমরা সকল ব্যবসায়ীরা চাই জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বন্ধের নির্দেশনা দ্রæত বাস্তবায়ন করা হোক।
এ ব্যাপারে ইউএনও জুলিয়া সুকায়না জানান, তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। তারা যদি বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারে সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কেটের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।