পাঁচ বছরে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে ‘পাঁচ লাখ’ শিশু
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সশস্ত্র সংঘাতের কারণে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অন্তত পাঁচ লাখ শিশু প্রাণ হারিয়েছে বলে সেভ দ্য চিলড্রেনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জার্মানির মিউনিখে শুরু হওয়া নিরাপত্তা সম্মেলনের সঙ্গে সময় মিলিয়ে শনিবার ‘স্টপ ওয়ার অন চাইল্ড’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন অর্থাৎ গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক শিশু সংঘাত প্রভাবিত এলাকায় বসবাস করে। আফগানিস্তান, ইয়েমেন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কঙ্গো (ডিয়ারসি), সিরিয়া, ইরাক, মালি, নাইজেরিয়া ও সোমালিয়া ২০১৭ সালে সংঘর্ষের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুদ্ধ ও সংঘাতের পরোক্ষ প্রভাব যেমন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো (হাসপাতাল), স্বাস্থ্যসেবা ও সাহায্যের দু®প্রাপ্যতা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার খারাপ অবস্থা ইত্যাদি কারণে শিশুমৃত্যু ঘটছে বলে পর্যবেক্ষণ সেভ দ্য চিলড্রেনের।
তাদের মতে, সংঘাতপ্রবণ এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় না জন্ম নিলে বা ওই এলাকায় এই শিশুরা না থাকলে হয়ত তাদের মৃত্যু ঘটত না। সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেলে থর্নিং স্মিথ বলেন, আমাদের প্রতিবেদন করতে গিয়ে দেখা যায় যে, এই সময়ে যুদ্ধগুলো যেভাবে লড়া হয় সেগুলো শিশুদের জন্য আরও বেশি কষ্ট সৃষ্টি করছে। বাচ্চাদের হত্যা এবং লাঞ্ছিত হওয়ার সংখ্যাও তিনগুণ বেশি। এই একুশ শতকে এসে আমরা ‘যুদ্ধাবস্থায় শিশু ও অসামরিক কাউকে লক্ষ্যবস্তু করা যাবে না’ এই নীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।
আমাদের রিপোর্টের বিশ্লেষণে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, শিশুদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ছে এবং এই পৃথিবী তা হতে দিচ্ছে। প্রতিদিন সশস্ত্র দলগুলো এবং সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
যুদ্ধ চলাকালে কীভাবে স্কুল সুরক্ষিত রাখা যায়, নির্দিষ্ট কিছু অস্ত্রের বাইরে অন্য কিছু ব্যবহার না করা, শিশুদের নির্যাতন-নিপীড়নের ক্ষেত্রে জবাবদিহি তৈরি এবং যুদ্ধ অভিজ্ঞতা থেকে শিশুদের বেরিয়ে আসতে বিভিন্ন উদ্যোগ কীভাবে তাদের জীবনে পার্থক্য তৈরি করতে পারে সে বিষয়গুলোর ওপরও আলোকপাত করা হয়েছে প্রতিবেদনে।