পশ্চিমবঙ্গকে লণ্ডভণ্ড করেই বাংলাদেশে ঢুকবে আম্পান
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক : প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের গতিমুখ বর্তমানে পুরোপুরি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা ও সাগরদ্বীপ বরাবর। এই দুই অঞ্চলের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। আর বাংলাদেশ উপকূল থেকে রয়েছে ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে।
আর দীঘা ও সাগরদ্বীপ থেকে রয়েছে দক্ষিণ-দক্ষিণ পুবে। এক্ষেত্রে যে কোনো সময় ঝড়টির মুখ উঠে আসবে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে। এক্ষেত্রে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর এক বুলেটিনে জানিয়েছে, বর্তমানে আম্পানের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার, যা ১৯০ পর্যন্ত বাড়ছে।
এদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর সমুদ্রবন্দর ও উপকূলীয় এলাকার পর এবার দেশের অভ্যন্তরেও মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর এবং মাদারীপুর অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮৯ কিমি অথবা তারও অধিক বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্য অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমি বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
নদীবন্দরের জন্য চার নম্বর মহাবিপদ সংকেতই হচ্ছে চূড়ান্ত সতকর্তা।
দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দিয়ে বোঝানো হয়-বন্দর এলাকায় নিম্নচাপের সমতুল্য তীব্রতার একটি ঝড় বা একটি কালবৈশাখী ঝড়। যার গতিবেগ ঘণ্টায় অনূর্ধ্ব ৬১ কিলোমিটার। নৌ-যান এদের কোনোটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট নৌ-যানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
আর চার নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দিয়ে বেঝানো হয়- বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত এবং বন্দর এলাকায় সহসাই আঘাত হানবে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার তদূর্ধ্ব। এসময় সব ধরনের নৌ-যানকে নিরাপদ আশ্রয় থাকতে হবে।
এদিকে আম্পানের তীব্রতার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মোংলা-পায়রা সমুদ্রবন্দরে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত বলতে বোঝানো হয়- বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। এসময় ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা এর বেশি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
আর দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দিয়ে বোঝানো হয়- বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার বেশি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার (২০ মে) বিকেল/সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি কোনো স্থান দিয়ে উপকূলে ওঠে আসতে পারে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিমি।