পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সমন্বিত অফিস ভবন হবে: প্রধানমন্ত্রী
স্থানীয় পর্যায়ে জনগণ যাতে এক জায়গায় সব সরকারি সেবা পেতে পারে, সেজন্য সারা দেশেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণের পরিকল্পনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠান থেকে মাদারীপুরে নির্মিত সমন্বিত অফিস ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত ২৪৭৪টি ফ্ল্যাটের পাঁচটি আবাসন প্রকল্প, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাটও হস্তান্তর করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রশাসনের জেলাভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণ সরকার এমন ব্যবস্থা করতে চায়, যাতে সরকারি কর্মচারীদের কাজের সুবিধা হয়, আবার জনগণও যাতে একবারে এক জায়গায় সব ধরনের সরকারি সেবা পায়।
“আজকে আমরা মাদারীপুরে যে সমন্বিত সরকারি অফিস… অর্থাৎ সমস্ত কাজগুলো চলবে একই বিল্ডিংয়ে। প্রত্যেকে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করবেন, আর যে সরকারি সেবা পেতে যাবেন, এক জায়গায় গিয়েই সব কাজ পাবেন।
“তাতে যেমন রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম কমবে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উপরেও চাপ পড়বে না। যারা যাবেন, তাদের যাতায়াতের খরচটাও বেঁচে যাবে। ওখানে বসে, এক জায়গায় বসে তারা সব কাজ করে আসতে পারবেন। একটা সমন্বয় থাকবে।”
এ ধরনের সমন্বিত অফিস হলে যে জমিরও সাশ্রয় হবে, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সব সময় এটা মাথায় রাখতে হবে- জমির সাশ্রয় করা। সেজন্য এটা মাদারীপুরে প্রথম আমরা করলাম। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক জেলায় আমরা করব, প্রতি উপজেলায় করে দেব।
“কারণ উপজেলায় শুধু সরকারি অফিস না, আমি চাচ্ছি যে প্রত্যেক উপজেলায় ফ্ল্যাট তৈরি করে দেব। কারণ অনেক চাকরিজীবীকে সেখানে যেতে হয়, থাকার অসুবিধা, ভালো বাড়ি ভাড়া পান না, নানা অসুবিধায় পড়তে হয়। সেদিকে বিবেচনা করে আমরা সেটাও করে দেওয়ার চিন্তা করছি।”
সরকারি কর্মচারীরা যাতে ভালো পরিবেশে থাকতে পারেন, তাদের মেধা ও শক্তির পুরোটা কাজে লাগাতে পারেন, সেটাই সরকারের লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে আমাদের সরকারি কর্মচারী প্রয়োজন। আমাদের সংবিধানে কিন্তু সরকারি অফিসারদের সরকরি কর্মচারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কে উঁচু কে নিচু সেটা দেখা হয়নি। … আমরা যখন সরকার গঠন করি, তাদেরকে যখন কাজ করাই, তো তাদের ভালো মন্দটাও আমাদের দেখতে হবে।”
স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনমানের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমি সরকার গঠন করার পর দেখেছি যে আমাদের সরকারি অফিসাররা একবার একটা বাসা পেলে তার যতই প্রমোশন হোক, সেখানেই সে থাকবে, কারণ পরে ভালো বাসা পাবে কিনা তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।
“আমি সরকার গঠন করার পর থেকে উদ্যোগ নিই যে সকলের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করে দেব, এবং ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেব।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্দেশ্যটা এইজন্য যে আমাদের ভূমির পরিমাণ কম, জনসংখ্যা বেশি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাড়ে ৭ কোটি থেকে এখন সাড়ে ১৬ কোটির উপরে মানুষ। কাজেই আমাদের সরকারের পরিধিও বেড়েছে, কাজের পরিধি বেড়েছে। আমাদের সরকারি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে।
“সেটা বিবেচনা করে আমরা ঠিক করলাম যে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেব। বিভিন্ন পর্যায়ের যারা আছেন উচ্চপদস্থ, সেই উচ্চপদস্থ থেকে নিম্ন পর্যায়ের সকলের জন্যই ফ্ল্যাট বাড়ি করে সকলকে একটা সুন্দর পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করে দেব, যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারেন।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।