November 27, 2024
বিনোদন জগৎ

পরীমনির জামিন না চাওয়ার ‘কারণ’ বললেন আইনজীবী

টেকনিক্যাল কারণেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন করেননি আইনজীবী। পরীমনির প্রশ্নের উত্তরে তার আইনজীবীরা এ কথা বলেন।

শনিবার (২১ আগস্ট) পরীমনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

অন্যদিকে পরীমনির আইনজীবীরা তার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তার সঙ্গে আইনজীবীদের দেখা করার আবেদন নামঞ্জুর করার আবেদন করেন। এরপর বিচারক শুনে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। পরে বিচারক দেখা করার আবেদন নামঞ্জুর করে পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিচারক এজলাস ত্যাগ করার পর পরীমনি আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আমার জামিন চাচ্ছেন না কেন? আমি পাগল হয়ে যাব। আপনারা আমার জামিন চান, আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? সিনিয়র আইনজীবী কই, তিনি আসলেন না কেন? এ সময় আইনজীবীরা বলেন, ‘আমরা টেকনিক্যাল কারণেই জামিন চাচ্ছি না।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ১৩ আগস্ট ছয়দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।

এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের দেখা করার আবেদনটি নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পরীমনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগীকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের প্রথম দফায় চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ রিমান্ড শেষে ১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর দ্বিতীয় দফায় দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অভিযানে ভয়াবহ মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। পরীমনির ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস এবং ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।

এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে র‌্যাব সদর-দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে বনানী থানার উদ্দেশে রওনা দেয় র‌্যাবের টিম।

এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এমনকি এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। তিনি বাসায় নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

পরীমনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও পাঁচ-সাতটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। প্রযোজক রাজ তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় সিনেমা জগতে নিয়ে আসেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *