পদ্মা সেতুর আরও দুটি স্প্যান বসতে পারে মার্চে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পদ্মা সেতুর আরও বড় একটি অংশ শিগগিরই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জাজিরা প্রান্তে সাতটি স্প্যান স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে এবং মাওয়া প্রান্তে একটি স্প্যান অস্থায়ীভাবে রাখা আছে। এ মাসেই (মার্চ) আরও দুটি স্প্যান বসানোর শিডিউল রয়েছে। চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি এবং এ মাসের শেষের দিকে আরেকটি স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। স্প্যান ৬ ডি বসবে জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারে। স্প্যান ৬ সি বসবে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদ্মা সেতুর এক সহকারী প্রকৌশলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পদ্মা সেতুর মোট ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসবে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০টি স্প্যান বাংলাদেশে এসেছে। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ার কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে স্প্যানের টুকরো অংশগুলো জোড়া লাগিয়ে রঙ করা হয়। পরে সেখান থেকে ‘তিয়ান-ই’ ক্রেনে করে বহন করে পিলারের ওপর বসানো হয়। জানা গেছে, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে আরও ৭টি স্প্যান জোড়া দেওয়া হয়েছে, দুটি স্প্যানের রঙ করা শেষ। আর বাকি স্প্যানগুলো জোড়া দেওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।
এসকল তথ্য দিয়ে পদ্মাসেতুর এক সহকারী প্রকৌশলী জানান, ‘পিলারের নকশার জটিলতার কারণে কাজের সিকোয়েন্স পরিবর্তন করতে হয়েছে। তবে এখন কোনও জটিলতা নেই। তাই মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে পুনরায় সিকোয়েন্সে ফিরতে পারবো। মূলসেতুর ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।’
এদিকে, প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) পদ্মা সেতুর রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ এ মাসেই শুরু হবে। সেতুতে মোট রোডওয়ে স্ল্যাব বসবে ২৯৩১টি। এরমধ্যে ৪৫০ টি স্ল্যাব তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে, রেলওয়ে স্ল্যাব বসবে মোট ২৯৫৯টি। যার মধ্যে ১৫২০ টি স্ল্যাব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং ১৯২ টি স্ল্যাব বসানো সম্পূর্ণ হয়েছে।
এ প্রকৌশলী আরও জানান, ‘মোট ৪২ টি পিলারের মধ্যে ২০ টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে এবং মোট পাইল ড্রাইভিং হয়েছে ২১৯টি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতুর কাজের সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছিল। কর্তৃপক্ষ এক বছরের জন্য সময় বৃদ্ধি করেছে। তবে প্রকৌশলীরা আশা করছেন ২০২০ সাল নাগাদ সেতুর কাজ সম্পন্ন হবে।’
উলেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। এর প্রায় ৪ মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর দেড় মাস পর ১১ মার্চ জাজিরা প্রান্তে তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। এরপর এক মাস ১৬ দিনের মাথায় পঞ্চম স্প্যানটি বসে ২৯ জুন। এর ৬ মাস ২৫ দিনের মাথায় ২৩ জানুয়ারি বসে ষষ্ঠ স্প্যানটি। এরপর এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে গত ২০ ফেব্র“য়ারি জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর সপ্তম স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ‘৬-ই’ বসানো হয়। এর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে দৃশ্যমান হয় সেতুর ১০৫০ মিটার।