December 21, 2024
জাতীয়

পদ্মা-মেঘনায় দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

জাটকা রক্ষা ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে শুরু করে ল²ীপুর জেলার চর আলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নদীতে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকার।

রবিবার রাত ১২টা থেকে ৩০ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অভয়াশ্রমের সময়ে জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের মাছ আহরণ, মজুদ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করতে পারবে না। আইন আমান্য করলে মৎস্য আইনে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রয়েছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে প্রতিবছরের মতো এ বছরও মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে মাছ আহরণ না করার জন্য জেলেদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলার নদী উপকূলীয় এলাকায় মৎস্য আড়ৎ ও বাজার এলাকায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য বনিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত বলেন, অভয়াশ্রমের সময় আমাদের প্রধান মৎস্য আড়ৎ চাঁদপুর মাছঘাট বন্ধ থাকবে। পদ্মা-মেঘনা নদীর কোনো মাছ বিক্রি হবে না। তবে দুপুরে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা চাষের মাছগুলো বিক্রি হবে।

মতলব উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহিরুল হায়াত বলেন, আমাদের উপজেলায় টাস্কফোর্সের সদস্যরা শুক্রবার থেকে নদীতে অভিযান শুরু করেছে। রাত ও দিনে সিডিউল অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হবে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আক্তার রুমা বলেন, আমাদের উপজেলায় নদীতে অভিযান কম হয়। রোববার সকাল থেকে বাজারে-সড়কে অভিযান করা হবে।

হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, হাইমচর মেঘনা নদী এলাকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে বরিশালের হিজড়া, মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলা, লক্ষ্মীপুর ও শরীয়তপুর জেলার জেলেরা এসে জাটকা নিধন করে। উপজেলা টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে আমরা খুবই আন্তরিক। দিন ও রাতে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, জাটকা ইলিশ রক্ষায় নদীতে উপজেলা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা সদরে দিন রাতে চারটি দল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযন পরিচালনা করবে। এরমধ্যে দু’টি কোস্টগার্ডের সঙ্গে আর দু’টি দল থাকবে নৌ-পুলিশের সঙ্গে। আর জেলা পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসাবে। সেখানেও মৎস্য অফিসার থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, অভিযান সফল করার জন্য ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা হয়েছে। এছাড়াও নদী উপকূলীয় এলাকায় জনপ্রতিনিধি, জেলে নেতা ও জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নিয়ে আরও সচেতনতামূলক সভা হবে। জেলেদের সচেতন করার জন্য মেঘ নদীর পাড়ে জেলে পল্লী, মৎস্য আড়ৎ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিং করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।

আসাদুল বাকি বলেন, জেলেদের এই দুই মাস মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৪ মাস ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে ফেব্রæয়ারি ও মার্চ মাসের চালের বরাদ্দ পৌঁছানো হয়েছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, জাটকা রক্ষায় এ বছর আমরা প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। টাস্কফোর্সের সবাইকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলার প্রায় ৫১ হাজার জেলে রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এসব নৌকাগুলো রেজিস্ট্রেশন করে প্রযুক্তির আওতায় আনার জন্য। তাহলে সহজেই আমরা জেলেদের অবস্থান সনাক্ত করতে পারবো।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *