পদ্মায় নৌকাডুবি: বধূসাজেই ভেসে এলো সুইটির লাশ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাজশাহীর পদ্মায় বর-কনেসহ দুটি নৌকাডুবির তিন দিন পর নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণির দেহ ভেসে এলো শ্যামপুর ঘাটে। তখনও তার গায়ে ছিল গয়না, দুই হাতে মেহেদীর রঙ, পরনে লাল বেনারসি; শুধু দেহটাই নিথর। গতকাল সোমবার সকাল ৭ টার দিকে পবা উপজেলার শ্যামপুর ঘাটের কাছে সুইটির লাশ পাওয়া যায়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নৌকাডুবির ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট নয় জনের লাশ উদ্ধার হল।
অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উদ্ধার অভিযানের সমন্বয়ক আবু আসলাম বলেন, সুইটি সাঁতার জানতেন। ভারী কাপড়-চোপড়ের কারণেই হয়ত পানিতে তলিয়ে যান। যেখানে নৌকা ডুবেছিল সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে তার লাশ ভেসে উঠেছে।
শ্যামপুর ঘাটের কাছে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় জেলেরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা সুইটির লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। সেইসঙ্গে উদ্ধার অভিযানও সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
সুইটি খাতুন পূর্ণি রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙেরহাট গ্রামের শাহিন আলীর মেয়ে। পদ্মার উল্টো দিকে চরখিদিরপুর গ্রামের ইনসার আলীর ছেলে রুমন আলীর সঙ্গে দেড় মাস আগে তার বিয়ে হয়। গত শুক্রবার চরখিদিরপুরে বরের বাড়িতে ছিল বউভাতের অনুষ্ঠান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় দুটি নৌকায় করে বর-কনে, আত্মীয়-পরিজনসহ ৩৬ জন ডাঙেরহাটে যাওয়ার সময় ঘটে দুর্ঘটনা। চরখিদিরপুর ও শ্রীরামপুরের মাঝামাঝি এলাকায় একটি নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেলে সেটি অন্য নৌকায় ধাক্কা দেয়। এ সময় দুটি নৌকাই মাঝ পদ্মায় ডুবে যায় ।
দুর্ঘটনার পরপরই বর আসাদুজ্জামান রুমন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও কনে সুইটিসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হন। ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি, নৌ-পুলিশ ও বিআইডাবøুটিএর ডুবুরি দল যৌথ উদ্ধার অভিযান শুরু করার পর একে একে তাদের লাশ উদ্ধার হয়।
কনে সুইটি ছাড়া নিহত অন্যরা হলেন- তার বড় বোন শাহীনুর বেগমের স্বামী রতন আলী (৩০), রতনের মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৫), চাচা শামীম হোসেন (৩৫), চাচি মিনা খাতুন (৩০), চাচাতো বোন রশ্মি (৭), খালাতো ভাই এখলাস আলী (২২), সুইটির ফুপাতো বোন রুরাইয়া খাতুন স্বর্ণা (১২) ও খালা আঁখি খাতুন (২৫)।