পদ্মায় আবারো মিলল মিঠা পানির কুমির
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় পদ্মা নদীতে বিলুপ্ত প্রজাতির একটি মিঠা পানির কুমির ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলেদের জালে কুমিরটি ধরা পড়ে। পরে, রাজশাহী থেকে বনবিভাগের উদ্ধারকারী দল কুমিরটিকে নিয়ে যায়। এর আগে পাবনার দোগাছি ইউনিয়নের চরকোমরপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে গত ডিসেম্বর মাসে মিঠা পানির বিলুপ্ত প্রজাতির একটি কুমির শনাক্ত করে বনবিভাগ। তবে, মঙ্গলবার ধরা পড়া কুমিরটি আগের কুমিরের চেয়ে আকারে ছোট।
পাবনা ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভাঁড়ারা ইউনিয়নের দড়িভাউডাঙা গ্রামে পদ্মা নদীর কোলে একটি বড় আকারের কুমির দেখতে পান গ্রামবাসী। তিনি বলেন, আমরা স্থানীয় জেলেদের সাথে নিয়ে মঙ্গলবার কুমিরটিকে ধরার উদ্যোগ নেই। সারাদিন চেষ্টার পর বিকেলে কুমিরটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। উদ্ধার হওয়ার সাথে সাথেই জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগকে এ বিষয়ে জানানো হয়। সন্ধ্যার পরে রাজশাহী থেকে বনবিভাগের কর্মকর্তারা এসে কুমিরটিকে নিয়ে যায়।
পাবনা জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের নিকট থেকে খবর পেয়ে আমরা বনবিভাগের মাধ্যমে কুমিরটি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিই। তিনি বলেন, বনবিভাগের কর্মীরা উদ্ধার হওয়া কুমিরটির চিকিৎসা করছেন। এটি বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির। ঢাকায় নিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে, চরকোমরপুরে দেখা পাওয়া কুমিরটি নয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক। চরকোমরপুরে পদ্মা নদীতে আটকে পড়া কুমিরটিকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
পাবনা বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ আন্দোলনের আহŸায়ক এহসান বিশ্বাস লিঠু জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খাদ্য সংকটে বন্য প্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসছে। আতঙ্কিত হয়ে অনেক সময় স্থানীয় জনগোষ্ঠী এদের হত্যা করে ফেলে।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরাও ভাঁড়ারা এলাকায় গিয়েছি। তবে এখানকার মানুষ কুমিরটিকে হত্যা না করে, সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। জলজ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণে এভাবে সবাই সচেতন হলে, প্রজাতির বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সামাজিক বনবিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা কুমিরটি উদ্ধার করেছি। কুমিরটি প্রায় সাত ফুট আকৃতির। এটি স্বাদু পানির বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির। বর্তমানে বাংলাদেশে এ প্রজাতির কুমির সচরাচর চোখে পড়ে না। আমরা কুমিরটিকে গবেষণা করে, পুনরুৎপাদনের উদ্যোগ নেব।