পদ্মাসেতুর জটিলতা শুরুর ২ পিলারে স্থায়ীভাবে বসলো স্প্যান
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পদ্মাসেতুতে কাজের শুরুতে পিলার নিয়ে জটিলতা শুরু হওয়া ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে স্থায়ীভাবে বসানো হলো ‘১-এফ’ স্প্যান। পিলার দুটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্রায় এক বছর ৩ মাস ধরে স্প্যানটি পাশের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে রাখা ছিল।
গতকাল সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় স্থায়ীভাবে স্প্যানটি সফলভাবে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় বসানো হয়। ইতোমধ্যে ২০টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৩ কিলোমিটার।
এর আগে রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ৪-৫ নম্বর পিলারে রাখা ধূসর রঙয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান ই’ বহন করে রাখে। ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর অস্থায়ীভাবে স্প্যানটি রাখা হয়েছিল।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ নম্বর পিলারের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করে সেতুর কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু ৩টি করে পাইল স্থাপনের পর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের। নদীর তলদেশের নরম মাটি থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়। নতুন নকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রকৌশলীদের। ফলে প্রথম দিকে আসা এ দু’টি পিলারের স্প্যানটি মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে তৈরি করে রাখা ছিল দীর্ঘদিন। এজন্য সেখানে অন্য স্প্যান রাখার জায়গা হচ্ছিল না। অন্য স্প্যান রাখার জায়গা সংকুলান করতে পাশের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি রাখা হয়েছিল। ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে স্প্যানটি।
পদ্মাসেতু। বাংলানিউজ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, ১০ জানুয়ারি পদ্মাসেতুতে ২১তম স্প্যান ‘৬-বি’ সেতুর ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের উপর বসানোর পরিকল্পনা আছে প্রকৌশলীদের। মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩৬টি পিলারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সেতুর ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, ২৯ নম্বর পিলারের কাজ চলমান আছে। পদ্মাসেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩টি স্প্যান। দুইটি স্প্যান চীন থেকে মাওয়ার পথে রওনা হয়েছে। বাকি ৬টি স্প্যান চীনে প্রস্তুত করা হচ্ছে মাওয়ায় পাঠানোর জন্য। চলতি বছরের মার্চের মধ্যে সব স্প্যান আসার কথা রয়েছে।
জানা যায়, পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে ¯ø্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে ¯ø্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। পদ্মাসেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।