পথশিশুর গায়ে আগুন: জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ হাই কোর্টের
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় পথশিশুর গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। মতিঝিল থানার ওসিকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
পাশাপাশি পথ শিশুদের পুনর্বাসনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। পথশিশুদের পুনর্বাসনে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিটের সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার হাই কোর্ট এই রুলসহ এই আদেশ দেয়।
পথশিশুদের পুনর্বাসনে ‘যথোপযুক্ত দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ’ নিতে কেন নির্দেশ নেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজ কল্যাণ সচিবসহ বিবাদীদের ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
আইনজীবী মনিরুজ্জামান পরে বলেন, রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় সেলিম নামের ১০ বছর বয়সী যে শিশুটির গায়ে আগুন দেওয়া হয়েছে, তার চিকিৎসা ও দেখভালের দায়িত্ব মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নিতে বলা হয়েছে।
মতিঝিল এলাকার একজন ভিক্ষুক সোমবার বিকালে সেলিম নামের শিশুটিকে দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যান। মঙ্গলবার সেই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসে। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সেলিম ফকিরাপুল এলাকায় ফুটপাতে থাকত, এক নারীকে মা বলে ডাকত।
ছেলেটি আমাদের বলেছে, সোমবার বিকালে এক রিকশাচালক তার সেই মাকে ‘কু-প্রস্তাব’ দেয়; তার প্রতিবাদ করলে ছেলেটির সাথে রিকশাচালকের তর্কাতর্কি হয়। পরে ছেলেটি কমলাপুর এলাকায় গেলে সেখানে তাকে পেয়ে ওই রিকশাচালক তার শার্টে আগুন লাগিয়ে দেয়।
মতিঝিল থানার এসআই জালাল উদ্দিন বলেন, শিশুটি যে নারীকে মা বলে ডাকত, তার সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে। তিনিও এক রিকশাচালকের সঙ্গে সেলিমের ঝগড়ার কথা বলেছেন। সেই রিকশাচালকের চেহারার বর্ণনা দিয়েছেন ওই নারী। রিকশাচালকে খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে।
ওই নারীও ফুটপাতে থাকেন জানিয়ে জালাল বলেন, তার কথা কিছুটা অসংলগ্ন, মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়। বাড়ি বলেছে চট্টগ্রামে। সেলিমের কোনো বাবা-মা নেই বলেও সে আমাদের জানিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান বার্ন ইউনিটের এইচডিইউতে সেলিমের চিকিৎসা চলছে। তার শরীরের ২৭ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।