নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার
দাবি পূরণের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
নৌ ধর্মঘটে শনিবার দিনভর যাত্রীদের ভোগান্তির পর মধ্যরাতে এই ঘোষণা এলো।
শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও খাবার ভাতা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে শুক্রবার রাত ১২ টা ১মিনিট থেকে শুরু হয় ধর্মঘট। এতে দক্ষিণ জনপদের জেলাগুলো থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তি হয়। মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠা-নামা ব্যাহত হয়।
এই প্রেক্ষাপটে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান বিকাল ৩টা থেকে শ্রম ভবনে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।
সেখানে নীতিগতভাবে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ায় ফেডারেশনের নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতার হোসেন জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার শ্রমিকদের দাবি সব মেনে নিয়েছে। তাদের খাদ্য ভাতা ২০২০ সালের মার্চ থেকে কার্যকর করা হবে।”
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শ্রমিকদের খাবার ভাতা ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে কার্যকর করা হবে এবং অন্যান্য দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সেই আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”শনিবার রাত থেকেই সারা দেশে নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফেডারেশনের দাবিগুলো হলো ১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ করা ২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া ৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা দেওয়া ৪. সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ ৫. এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ ৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ ৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়া ৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন ৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও সনদ নবায়ন, বেআইনি নৌ চলাচল বন্ধ করা ১০. নৌপরিবহন অধিদপ্তরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা এবং ১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ধর্মঘটের প্রভাব
নৌ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের মধ্যেও শনিবার ঢাকা সদরঘাট থেকে কিছু লঞ্চ ছেড়ে যায়।
ধর্মঘটের মধ্যে সারা দিন সদরঘাট থেকে ৩২টি লঞ্চ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে, যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় ৮০টির মতো লঞ্চ ছেড়ে যায়।
ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে রফরফ-১ লঞ্চ চাঁদপুর ও চরভৈরবীর উদ্দেশে যাত্রা করে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক দীনেশ কুমার সাহা।
সুত্র :বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম