নৌযান ধর্মঘটে অচল খুলনা-মোংলা
দ: প্রতিবেদক
দেশব্যাপী নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে খুলনাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে খুলনা ও মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ১১ দফা দাবি আদায়ের জন্য নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘট শুরু করে।
অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘটের ফলে খুলনার বিআইডব্লিউটিএ, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এবং রুজভেল্ট জেটিতে অবস্থানরত কোনো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হয়নি। এছাড়া খুলনা লঞ্চঘাট থেকে কোনো নৌযান ছেড়ে যায়নি বা আসেনি। এমনকি মংলা বন্দর থেকে যশোরের নওয়াপাড়া পর্যন্ত কোথাও কোনো নৌযান চলছে না। ফলে এসব ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ৭ শতাধিক নৌযান নোঙ্গর ফেলে অবস্থান করছে পণ্য ওঠানামার জন্য।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, খুলনা ও যশোরের নওয়াপাড়ার কার্গো বার্জ থেকে পণ্য নেওয়ার জন্য শত শত ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলেও নৌযান শ্রমিকরা কাজ না করায় শিল্প নগরী খুলনা ও মোংলা বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মঘটের ফলে মাদার ভ্যাসেল থেকে পন্য বন্দরের জেটিতে আনা নেওয়া এবং বন্দর থেকে নদী পথে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে পরিবহন বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে মংলা বন্দর থেকে সারাদেশে প্রধানত নদী পথে পণ্য পরিবহনের কারণে ধর্মঘটে বন্দরের কার্যক্রম স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কেন্দ্রের ডাকা ধর্মঘট খুলনা ও মোংলায় সর্বাত্বকভাবে পালিত হচ্ছে। নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হওয়ায় শিল্পনগরী খুলনা ও মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সব ধরনের দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্যবোঝাই-খালাস ও পরিবহন কাজ বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে খুলনার ঘাট এলাকায় মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। আমাদের ন্যায্য দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, শনিবার সকাল ৮টার পর থেকে মংলা বন্দরের সকল প্রকার নৌ শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছে। লাইটারেজ, কার্গো, বার্জ, অয়েল ট্যাঙ্কার, কোস্টার থেকে শুরু করে সব ধরনের জাহাজী নৌযানের শ্রমিকরা এক যোগে এই ধর্মঘট পালন করছে। ফলে বন্দরে জাহাজ থেকে পন্য ওঠানামা এবং দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নদী পথে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে নৌযান ধর্মঘটের ফলে খুলনা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্যবোঝাই-খালাস কাজ বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
উলেখ্য, শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। ১১ দফা দাবি আদায়ে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে।