December 23, 2024
জাতীয়

নুসরাতের সেই মাদ্রাসা এখন সিসি ক্যামেরার আওতায়

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ফেনীর আলোচিত সেই সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা অবশেষে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে ক্যাম্পাসে ১০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিনব্যাপী কাজ করে মাদ্রাসাটি পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়।

এই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে যে কোনো ধরনের অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ওই মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত হয় মাদ্রাসাটি।

এর আগে ২০১৮ সালে গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মাদ্রাসায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হলেও মাদ্রাসা তহবিলে আর্থিক সংকটের অজুহাত তুলে সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা একক সিদ্ধান্ত নিয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাননি। তবে এ সিদ্ধান্ত ভিন্নভাবে দেখছেন মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সাবেক শিক্ষানুরাগী সদস্য, পৌর কাউন্সিলর শেখ মামুন।

তিনি দাবি করেন, ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি গভর্নিং বডির সভায় তার প্রস্তাবনার আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার অপকর্ম চালানোর জন্য গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাননি। যদি সিসি ক্যামেরা লাগাতো নুসরাতের মতো মেধাবী ছাত্রীকে নৃশংসভাবে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মরতে হতো না।  দেরিতে হলেও মাদ্রাসাটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসায় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ হোছাইন জানান, গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মাদ্রাসাটি পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আশা করি এবার কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে প্রমাণ হিসেবে সিসি টিভিতে রেকর্ড থাকবে। আর কেউ অপরাধ করেও পার পাবে না।

গত ২৭ মার্চ আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে অফিসকক্ষে ডেকে যৌন হয়রানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। ওইদিন তার মা বাদী হয়ে অধ্যক্ষকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। সে মামলা তুলে নিতে অধ্যক্ষের অনুসারীরা হুমকি দিতে থাকে নুসরাত ও তার পরিবারকে। মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে গত ৮ এপ্রিল ৮ জনের নাম উলে­খ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিবিআই ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়। আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *