নীলফামারীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, কিশোরীর আত্মহত্যা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় ‘ধর্ষণচেষ্টার’ পর এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল জানান, ভুজারীপাড়া গ্রামের দিজেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে সূর্য রায়ের (৩০) বিরুদ্ধে তারা এই অভিযোগ পেয়েছেন। তবে পরিবারের দাবি, সূর্যকে ফাঁসানো হয়েছে।
শনিবার ওই গ্রামের সুমি রানী রায় নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করলে সূর্যর বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মামলা হয়। সুমি ওই গ্রামের দিনমজুর হরেনচন্দ্র রায়ের মেয়ে। সে উপজেলার বাঙ্গালীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সুমির মা ময়না রায় অভিযোগ করেন, সূর্য র্দীঘদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে আত্মীয়স্বজন তাকে বেশ কয়েকবার সতর্কও করেছে। কিন্তু দুই সন্তানের বাবা সূর্য আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে সে রাস্তায় সুমির হাত ধরে টানাটানি করত। শনিবার পরিবারের সবাই গ্রামের মাঠে কাজ করার সময় বাড়িতে সুমি একা ছিল বলে তার দাবি।
মায়ের অভিযোগ, সুমি গোসলখানায় গোসল করার সময় সূর্য তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সূর্য পালিয়ে যায়। এ লজ্জা সহ্য করতে না পেরে মেয়ে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে দরজা না খুললে ভেঙ্গে দেখি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের তিরে ঝুলছে। তারপর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। সূর্য এর আগেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এর আগেও তিনি এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নিহত সুমির মা ময়না রানী থানায় ৩০৬ ধারায় হত্যামামলা করেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। তবে সূর্যর পরিবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সূর্যর মা দেবী বালা রায় (৫৫) বলেন, সুমির বাবা-মা কিংবা পরিবারের কেউ কোনো দিন সূর্যর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি। ঘটনার দিন সুমির বাবা হরেনচন্দ্র রায় তার গাছ কাটার জন্য আমার ছেলে সূর্যকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সুমির পরিবার ও তাদের এক প্রতিবেশী সূর্য ও সুমিকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেয়। এমন অপবাদ সহ্য করতে না পেয়ে সুমি আত্মহত্যা করে। নিজেদের দোষ ঢাকতে আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
সূর্যর স্ত্রী লিপি রানী রায় বলেন, আমার স্বামী নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। গ্রামের কয়েকজন মানুষ সত্যকে আড়াল করে পুলিশসহ সবাই মিথ্যা কথা বলছে। আমার স্বামী এমন খারাপ কাজ কখনও করতে পারে না।