নিউ ইয়র্কে আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৯ শিশুসহ নিহত ১৯
ঘর গরম রাখার হিটারের গোলযোগ থেকে নিউ ইয়র্কের একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে নয় শিশুসহ অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার বেলা ১১টার দিকে ব্রঙ্কসের স্বল্প খরচের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক টুইন পার্কস এর নর্থ ওয়েস্ট ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। ঘর গরম রাখার হিটারের গোলযোগ থেকে লাগা ওই আগুনের ধোঁয়া পুরো ভবনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর প্রায় ২০০ জন সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। তল্লাশির সময় ১৯ তলা ভবনটির প্রতিটি তলায় লাশ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কমিশনার ড্যানিয়েল নিগ্রো।
গত ৩০ বছরে অগ্নিকাণ্ডে নিউ ইয়র্কে এতো মৃত্যু আর দেখা যায়নি বলে এনবিসি নিউজকে বলেছেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরের আরেকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আগুন লেগে আট শিশুসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
রোববারের আগুন দু’টি তলায় সীমাবদ্ধ থাকালেও এর ধোঁয়া সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, জানিয়েছেন কমিশনার নিগ্রো। আগুনের সূত্রপাত যে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে সেটির দরজা খোলা থাকায় সব তলায় ধোঁয়া পৌঁছে যায়।
তিনি বলেন, “অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা প্রত্যেক তলার সিঁড়িতে মৃতদেহ পায়, দমবন্ধ ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ অবস্থায় তাদের বের করে আনা হয়।”
প্রতিবেশী জর্জ কিং জানান, আগুন ছড়িয়ে পড়ার সময় লোকজন জানালা দিয়ে হাত নাড়ছিল।
“আমি ধোঁয়া দেখেছি, বহু লোক আতঙ্কে চিৎকার করছিল, তবে ভবনটি থেকে কেউ ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছিল না,” বলেন তিনি।
মেয়র অ্যাডামসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন রিঙ্গেল জানিয়েছেন, মোট ৬৩ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে আর ১৩ জন সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হকল রোববারের ঘটনাকে ‘শোচনীয় এক রাত’ বলে বর্ণনা করে একটি ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
“নতুন বাড়িতে যাওয়া, দাফনের খরচ ও অন্যান্য প্রয়োজনে অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে,” বলেছেন তিনি।
নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসের যে এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে বহু মুসলিম অভিবাসী বসবাস করে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকাংশই গাম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন বলে ধারণা।
তাদের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস নিয়ে অস্বস্থিবোধ না করে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন সবাইকে কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র অ্যাডামস। তাদের বিস্তারিত তথ্য ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছে পাঠানো হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।