নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন কক্সবাজারের ডিসি
সমুদ্রসৈকতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালন না করা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদ আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
আদালত এ বিষয়ে শুনানি শেষে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সৈকতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৯ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে ডিসি মানুনুরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ সংক্রান্ত অভিযোগ বিষয়ে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বুধবার ব্যাখ্যা দিতে সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হন ডিসি মামুনুর রশীদ।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে ডিসির পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতজা উদ্দিন ফকির।
গত ২৫ আগস্ট উচ্চ আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি নিয়ে কক্সবাজারের ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। একই সঙ্গে ডিসি মামুনুর রশীদকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে ১৯ অক্টোবর তারিখ ধার্য করে দেন।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সমুদ্রসৈকতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে কক্সবাজারের ডিসিসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছিল, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অক্ষুণ্ন রাখতে সেখান থেকে সব অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থে এইচআরপিবি আদালতে রিট মামলা দায়ের করলে আদালত রায় দেন। রায়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশনা দেন। জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৭ জুন বিবাদীদের কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কয়েকদিন আগে এইচআরপিবির প্রতিনিধি সমুদ্রসৈকত এলাকায় পর্যবেক্ষণে গেলে সৈকত এলাকায় অনেক অবৈধ দখল ও স্থাপনা দেখতে পান। যদিও এর আগে রায় হওয়ার পরে আদালতের নির্দেশে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই দখল ও স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার সামিল।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডিসিসহ পাঁচজনের বিষয়ে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে।
যে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয় তারা হলেন- কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, উপ-পরিচালক, টাউন প্লানার তানভির হাসান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবর রহমান।