নারী কর্মীদের সুরক্ষায় দূতাবাসে দেশি পুলিশ চান আইজিপি
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয় দেখভালের জন্য বিদেশের দূতাবাসগুলোতে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন আইজিপি জাবেদ পাটোয়োরী। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ পার্কে (গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠ) এক অনুষ্ঠানে পুলিশ বাহিনীর প্রধান বলেন, আপনারা দেখেছেন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের নারী শ্রমিকরা ফিরে আসছে অনেকে।
আমরা মনে করি যে, সে সকল দেশে নিরাপত্তার জন্য আমাদের দূতাবাসগুলোতে যদি নারী পুলিশ অথবা আমাদের পুলিশদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে আমাদের নারীদের সুরক্ষায় সচেষ্ট হতে পারব।
সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার নারী শ্রমিকদের ফেরত আসা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ‘নারী-পুরুষ সমতা ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অধিকার’ নিয়ে এক অনুষ্ঠানে তার এমন বক্তব্য আসে। নিয়মভঙ্গের অভিযোগ এনে কেবল চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ২১ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে বলে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির তথ্য।
এ সময়ে সৌদি আরবে গৃহকর্মে যাওয়া অন্তত ৯৬০ জন নারীও দেশে ফিরে এসেছেন। এই নারীদের বেশিরভাগই নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ করছেন। এর মধ্যে অন্তত ৪৮ জন নারীর মৃতদেহ এসেছে সে দেশ থেকে। নারী অধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন জনের দাবির পর স¤প্রতি জাতীয় সংসদেও সৌদি আরবে নারীকর্মী পাঠানো বন্ধের দাবি উঠেছে।
আইজিপি বলেন, দূতাবাসগুলোতে সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশ সদস্যরা কাজ করে। সেখানে নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তায় তারা কাজ করে থাকে। তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে এই পুলিশরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। দূতাবাসে আমাদের পুলিশ সদস্যদেরকে নিয়োগ করা হলে সে দেশে আমাদের যেসব নাগরিকরা রয়েছেন- বিশেষ করে নারী সদস্যরা রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন জায়গায়- তাদের সুরক্ষায় আমরা কাজ করতে পারব।
দূতাবাসগুলোতে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব এবছর ফেব্র“য়ারিতে পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে তোলা হলে তিনি তাতে সম্মতি দেন বলে অসমর্থিত সূত্রে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছিল।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, দূতাবাসে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা নিয়োগ পেলে নাগরিকদের পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, হতাহতদের উদ্ধারে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, পলাতক সন্ত্রাসী বা অপরাধীদের শনাক্ত করতে পুলিশ সদর দপ্তরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সহজ হবে। নারী-শিশুদের অধিকার রক্ষায় পুলিশের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর চালুর সাফল্য অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন জাবেদ পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, গত দুই বছরে দুই কোটির বেশি কল পেয়েছি, যার প্রায় ৪০ শতাংশই আমাদের নারীদের কাছ থেকে এসেছে। গত দুই বছরে আমরা প্রায় ৫৮ লাখ লোককে সহায়তা দিতে পেরেছি, তার অধিকাংশই নারী।
আমরা ৯৯৯-এর মাধ্যমে অনেক বাল্যবিবাহ রুখে দিয়েছি। অনেক নারীরা, সহিংসতার আশঙ্কা ছিল, তারা আমাদেরকে কল করেছিল, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠিয়ে আমরা সেই সহিংসতা রুখে দেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়েছি।
বিশ্বব্যাপী ‘সিক্সটিন ডেইজ অফ অ্যাক্টিভিজম’ শীর্ষক আয়োজনের অংশ হিসাবে দুই দিনের ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।