নারীদের দখলে এই বছরের হলিউড
২০২০ সালে মুক্তি পেতে যাওয়া চারটি ছবি পরিচালনা ও কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নারীরা।
‘ওয়ান্ডার উইম্যান নাইনটিন এইটিফোর’, ‘ব্ল্যাক উইডো’, ‘দি ইটারনাল্স’ এবং ডিজনির ১৯৯৮ সালের অ্যানিমেইটেড মুভি’র জীবন্ত সংস্করণ ‘মিউলান’। আর এই চার ছবি পরিচালনা করেছেন চার নারী নির্মাতা যথাক্রমে- পেটি জেনকিন্স, কেইট শর্টল্যান্ড, ক্লোই ঝাও এবং নিকি ক্যারো।
অবশ্যই এই চার ছবির কেন্দ্রিয় চরিত্রে আছেন চার অভিনেত্রী। এর মধ্যে ভক্তদের ভোটে নতুন বছরের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ছবির তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছে ‘ওয়ান্ডার উইম্যান নাইনটিন এইটিফোর’ এবং ‘ব্ল্যাক উইডো’।
যুক্তরাষ্ট্রের টিকিট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ফ্যানডাঙ্গো’র তত্ত্বাবধানে দুই হাজার ভক্তদের নিয়ে পরিচালতি এই ভোটের ফলাফলে পঞ্চম তালিকায় রয়েছে জেমস বন্ডের নতুন ছবিটি।
কাঙ্ক্ষিত প্রথম দুই ছবির কাহিনী আবার আবর্তিত হয়েছে অতীতের পটভূমিকায়।ডিসি সুপার হিরো ছবি, গাল গাদোত অভিনীত ‘ওয়ান্ডার উইম্যান নাইনটিন এইটিফোর’ ছবিতে পাওয়া যাবে আশির দশকের ছোঁয়া। অন্যদিকে স্কারলেট জোহ্যান্সেন অভিনীত মার্ভেলের ‘ব্ল্যাক উইডো’ ছবিতে পাওয়া যাবে এজেন্ট রোমেনাফ’য়ের অতীত জীবনের গল্প।
তবে ভক্তদের অনেকেই মনে করছেন ‘অ্যাভেঞ্জারস এন্ড গেইম’ ছবিতে যেহেতু ব্ল্যাক উইডো মারাই গিয়েছে সেখান তার অতীত নিয়ে নির্মিত ছবি পরে দেখে কী লাভ। এই ছবি মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল ‘এন্ড গেইম’য়ের আগে। অন্যদিকে ওয়ান্ডার উইম্যান দেখা অনেক ভালো- কারণ সে-তো বেঁচে আছে।
তবে এই দুই ছবি থেকে বলা যায়, ভবিষ্যতের কাহিনী নিয়ে সাইফাই ছবি তৈরির যে সংস্কৃতি হলিউড করছিল, সেখান থেকে সরে এসে অতীতের দিকে দৌঁড়ানোর একটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিভিন্ন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, যেন সাদাকালো অতীতকে রাঙিয়ে তোলার চেষ্টায় নেমেছে হলিউডের বিনোদন জগত।
শুধু তাই নয়, ২০২০ সালে হলিউডের বেশিরভাগ ছবিই মুক্তি পাচ্ছে ‘প্রিকুয়েল’, ‘সিকুয়েল’ নির্ভর কাহিনী নিয়ে। নয়ত ‘নতুন ভাবে তৈরি’ কিংবা ‘রিমেইক’ করা।ডিজনির ‘মিউলান’ ছবিটি সেরকমই, ১৯৯৮ সালের অ্যানিমেইটেড ক্লাসিক থেকে তৈরি করা। তবে এবার আর অ্যানিমেশন নয়, আসল মানুষ দিয়েই অভিনয় করানো হয়েছে। কেন্দ্রিয় চরিত্রে রয়েছেন চাইনিজ অভিনেত্রী লিউ য়েইফেই।
এদিকে ‘দি ইটারনাল্স’ ছবিতে অভিনয় করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। মার্ভেলের সুপার হিরো কমিকস থেকে নির্মিত ছবি হিসেবে এতেও থাকবে মার্ভেলে অন্যান্য ছবির আংশিক ছোঁয়া।
জেমস বন্ডের নতুন ছবি ‘নো টাইম টু ডাই’ মৌলিক ছবি হলেও জেমস বন্ড সিরিজেরই একটা অংশ।
এছাড়া এই বছর দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্ব হিসেবে মুক্তি পেতে যাওয়া ছবির তালিকায় রয়েছে, ‘এ কোয়াইট প্লেস- টু’, ‘ঘোস্টবাস্টার্স: আফটারলাইফ’, ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস নাইন’।
তবে মৌলিক ছবি হিসেবে যেগুলো মুক্তি পেতে যাচ্ছে এবছর সেগুলোও তৈরি হয়েছে ধার করে। ভিডিও গেইম থেকে বিষয়বস্তু নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘আনচার্টেড’ এবং ‘সনিক দি হেজহগ’। মঞ্চ নাটক থেকে তৈরি হয়েছে ‘হাইটস’ এবং ‘এভরিবডি টকিং অ্যাবাউট জেইমি’। ডিজনি থিমপার্কের আদলে তৈরি হয়ছে ‘জাঙ্গাল ক্রুজ’। এছাড়াও রয়েছে ‘দি কিং’স ম্যান’, ‘দি ইনভিজিবল ম্যান’।বর্ষিয়ান পরিচালকরাও পিছিয়ে নেই এই দৌঁড় থেকে। গেইম থেকে ধার করে স্টিভেন স্পিলবার্গ তৈরি করেছেন ‘ওয়েস্ট সাইড স্টোরি’ এবং ডেনিস ভ্যালেনিউভ বানিয়েছেন ‘ড্যুন’।
কিছু ছবির পরবর্তী কিস্তির জন্য বিশাল সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। সেই অপেক্ষার অবসানও ঘটতে চলেছে এই বছর। যেমন- ১৭ বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘লিগালি ব্লন্ড থ্রি’ এবং ‘ব্যাড বয়েজ ফর লাইফ’। ২৯ বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘বিল অ্যান্ড টেড ফেইস দি মিউজিক’। আর প্রায় ৩৪ বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে টম ক্রুজের ‘টপ গান’ ছবির দ্বিতীয় কিস্তি ‘টপ গান: ম্যাভরিক’। তরুণ বয়সে যারা এসব ছবি দেখেছেন তাদের জন্য তো অবশ্যই, নতুন প্রজন্মের কাছেও এই ছবিগুলো ভালো লাগবে বলে আশা করছেন নির্মাতারা।