November 27, 2024
আঞ্চলিক

নাটকীয় গরু চুরির মামলায় তেরখাদার দুটি পরিবার সর্বশান্ত

 

তেরখাদা প্রতিনিধি

খুলনা তেরখাদা উপজেলা প্রেসক্লাবে গোপালগঞ্জ সদর থানার ষড়যন্ত্রমূলক নাটকীয় গরু চুরির মামলায় তেরখাদার দুটি পরিবার হয়রানি ও সর্বসান্ত হওয়ার প্রতিবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলন গতকাল রবিবার বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ফুলমিয়া শেখ।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমি ফুলমিয়া শেখ (৭২) একজন ছোট গরু ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ভাইরা বিটা পিয়ার মল্লিকের (৩০)  সাথে সুনামের সাথে শেয়ারে গরুর ব্যবসা করে আসছি।  সম্প্রতি দিঘলিয়া থানাধীন ব্রোমগাতী গ্রামের মৃত হাসেম আলী শেখের পুত্র সাংবাদিক আরশাদ হোসেন বিগত ২৬-০২-২০১৯ইং তারিখে তার গৃহপালিত একটি গাভী (গায়ের রং কালো, মাথায় সাদা চিত) সাথে একটি এড়ে বাছুর (যার রং সাদা কালো। খুর জিহŸা লেজ সাদা বর্ণের) তেরখাদা থানাধীন মধুপুর গ্রামের মোক্তার শেখের পুত্র গরু ব্যবসায়ী শাহিন শেখের নিকট বিক্রয় করেন। উক্ত শাহিন শেখ এর কাছ এর নিকট হতে তার নিজ বাড়ি  থেকে গত ১৩-০৩-২০১৯ইং তারিখে আমি ও আমার ভাইরা বিটা পিয়ার মল্লিক এড়ে বাছুর টি ৩২,০০০/- টাকা দিয়ে ক্রয় করি। পরবর্তীতে ১৫-০৩-২০১৯ ইং তারিখে তেরখাদার ইখড়ি গরুর হাটে ৩২ হাজার ৫শত টাকায় বিক্রি করি।

এমন সময় হাট কমিটির এক সদস্য এসে জানান, এই গরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তখন আমরা গরুর ক্রেতার টাকা ফেরত দিয়ে দিই এবং অভিযোগকারী গোপাালগঞ্জ সদর থানাধীন সোনাপুর এলাকার নাসিম উদ্দিন তাহাকে সবাই বলে আপনার গরু যদি হয়, তাহলে গরুর চিহ্ণ বলেন। তখন তিনি বলেন, আমি বলতে পারবো না। আমার স্ত্রী বলতে পারবে। তখন তার স্ত্রী কে আনা হয়। তার স্ত্রী এসে সারা হাট খুজেও তার টি গরুটি সনাক্ত করতে পারে নাই। প্রায় ১ ঘন্টা পর মোবাইলে ফোনে কথা বলতে বলতে আমাদের গরুর পাশে এসে বলেন, এটিই আমাদের গরু। অথচ মোবাইলে কথা বলার পূর্বে প্রায় ১ ঘন্টা যাবত ঐ মহিলা আমাদের গরুর পাশ দিয়ে অনেকবার ঘোরা ফেরা করেও গরুটি চিহ্ণিত করতে পারেন নাই। তার স্বামী নাজিমুদ্দিনের সাথে এক লোক যে, প্রথম থেকে গরু দেখছেন, সেই লোক ফোনে নাজিমুদ্দিনের স্ত্রী কে গরুর চিহ্ণ ও রং বলে দিলে সৃষ্টি হয় নাটকীয় গরু চুরি মামলা আর তার কারনে অতিষ্ট আমরা। তখন আমাদের দুজন কে উক্ত গরু সহ তেরখাদা থানায় নেওয়া হয়। সেখানে গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই নিতাই চন্দ্র সাহা তেরখাদা থানার জিডি নং ৬৯৯, তারিখ ১৫-৩-২০১৯ মূলে গরু সহ আসামীদের কে গোপালগঞ্জ সদর থানায় গরু চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নিয়ে যান। গোপালগঞ্জ থানার হেফাজতে নেওয়ার পরে  গণেশ উল্টে যায়। নাজিম উদ্দিন শিকদার ঐ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন যে, ১৬-০৩-২০১৯ইং তারিখ দিবাগগত রাতে তার গোয়াল ঘর হ্ইতে চোরেরা গরু চুরি করে পিকাপ গাড়িতে নিয়ে গেছে। তিনি চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন আসামী ও এড়ে বাছুর সহ দুুজন কে আটক করে থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের কে গরু সহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এখানে উল্লেখ রয়েছে বাদী নাজিমুদ্দিনের গত ১৭-৩-২০১৯ তারিখের অভিযোগ। অথচ  গোপালগঞ্জ সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে ধৃত আমরা দুই আসামী ফুলমিয়া ও পিয়ার মল্লিক গত ১৫-০৩-২০১৯ থেকে ১৭-০৩-২০১৯ পর্যন্ত তিনদিন থানা হেফাজতে ছিলাম। তাহলে আমরা ঘটনাস্থলে পিকাপ নিয়ে গরু চুরি করতে আটক হলাম কি করে ? আমরা কি পুলিশি পাহারায় ও পুলিশ ফোর্স সহ বাদীর বাড়ি থেকে গরু চুরি করতে গিয়েছিলাম ? যাদের গরু সহ খুলনা তেরখাাদা থানা হইতে ৬৯৯নং জিডি বলে গোপালগঞ্জ থানার এসআই নিতাই চন্দ্র সাহা গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের কে হেফাজেেত নিলো। তারা কি করে পুলিশের লক আপে থেকে ১৭-০৩-২০১৯ইং তারিখে নাজিমুদ্দিনের বাড়ির গরু চুরি করে। তারা তো তখন গোপালগঞ্জ সদর থানায় পুলিশি হেফাজতে ছিল। গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ কি জানে না যে ধুত আসামীদ্বয় কে খুলনার তেরখাদা থানা থেকে আটক পূর্বক ৬৯৯নং জিডি বলে ১৫-০৩-২০১৯ইং তারিখে গোপালগঞ্জ থানার এসআই নিতাই চন্দ্র সাহা স্বাক্ষর করে আসামীদের কে নিয়ে যায়। এতেই প্রমাণিত হয় উপরোক্ত গরু বাদীর নয়। তাই নতুন করে ১৭-০৩-২০১৯ তারিখে গরু চুরি মামলা দেখিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহার সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তি ও গরু ফিরে পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *