নাগরিকপঞ্জি থেকে লাখো গোর্খা বাদ পড়ায় মমতার ক্ষোভ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আসামের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়াদের তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা, সাবেক প্রেসিডেন্টের পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে এমএলএ বা আদিবাসী, কে নেই? যা নিয়ে ভারত জুড়ে বিতর্ক ও তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বিরোধী দলের নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা সংবাদমাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। পিছিয়ে নেই ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতরাও। রাজ্য বিজেপি নেতারা বলছেন, নাগরিকপঞ্জি আসাম থেকে ‘হিন্দুদের বের করে দেওয়ার চক্রান্ত’।
প্রায় চার বছর ধরে যাচাই-বাছাইয়ের পর আসাম সরকার শনিবার সকালে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন জায়গা পেলেও বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন।
ওই তালিকায় এক লাখের বেশি গোর্খা আদিবাসীর নাম নেই বলে জানান প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসামে অবৈধ অভিবাসী খুঁজতে নাগরিকপঞ্জি তৈরির শুরু থেকেই এর কড়া সমালোচনা করেছেন মমতা।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরদিন এক টুইটে তিনি বলেন, শুরুতে আমি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ এনআরসি তালিকা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কিন্তু যখন একের পর এক তথ্য আসতে থাকে তখন আমরা হতবাক হয়ে দেখি এক লাখের বেশি গোর্খা জনগোষ্ঠীকে তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, হাজার হাজার প্রকৃত ভারতীয়কে তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে। যাদের মধ্যে সিআরপিএফ এবং অন্যান্য জওয়ানরা রয়েছেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবারের সদস্যের নামও তালিকায় নেই।
সরকারের এ বিষয়ে আরো সচেতন হয়ে কাজ করা উচিত ছিল উলেখ করে তিনি আরো বলেন, প্রকৃত ভারতীয়রা যেন তালিকার বাইরে না থাকে তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের প্রকৃত ভারতীয় ভাই ও বোনদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিনই আসামের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ক্ষোভের সঙ্গে ওই তালিকাকে ‘রাজ্যের হিন্দুদের বের করে দেওয়ার চক্রান্ত’ বলেছিলেন।
তার জবাব আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা তরুণ গোগোই বলেন অন্যায় হয়েছে বলে যদি বিজেপিই কান্নাকাটি করে তবে এর দায় কার? রাজ্যের বিজেপি সরকারই তো এ তালিকা প্রস্তুত করেছে।
এদিকে, তালিকায় নাম না থাকলেই বিদেশি বলে চিহ্নিত কিংবা বন্দিশিবিরে নেওয়া হবে না বলে ইতোমধ্যে আশ্বস্ত করেছে আসাম রাজ্য সরকার।
তালিকায় যাদের নাম নেই, তাদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে বলা হয়েছে ১২০ দিনের মধ্যে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যেই ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই খোলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে মামলায় হেরে গেলে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।