নাগরিকত্ব নিয়ে আপিলে হারলেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শামীমা
জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ( আইএস ) এ যোগ দেওয়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শামীমা বেগম তার যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের প্রথম পর্যায়ে হেরে গেছেন।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির নবম শ্রেণির ছাত্রী শামীমা আইএস এ যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ফেব্রয়ারিতে তাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে খুঁজে পাওয়া যায়।তার বয়স এখন ২০।
শামীমার খোঁজ মেলার পর তিনি আবার যুক্তরাজ্যে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ।
এরপরই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব টিকিয়ে রাখতে আইনি লড়াই শুরু করেন শামীমা। গতবছরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্ট এবং স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে (এসআইএসি) আবেদন করেন তিনি।
সেই আপিলের শুনানি শেষেই শুক্রবার সকালে রায় শুনিয়েছে আদালত। এতে বলা হয়েছে, শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সাজিদ জাভিদ নিয়েছেন তাতে শামীমা রাষ্ট্রহীন হবেন না।
তাছাড়া, এ পদক্ষেপে শামীমার মানবাধিকারও লঙ্ঘিত হবে না এবং তিনি বরং বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য চেষ্টা করতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী, কারও নাগরিকত্ব বাতিল করার ফলে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়লে এমন পদক্ষেপ বেআইনি। কিন্তু শামীমা তার মায়ের সম্পর্কের সূত্র ধরে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন বলেই মনে করে যুক্তরাজ্য।
আর একারণেই রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে শামীমার করা আপিল প্রত্যাখ্যান করে কমিশন (এসআইএসি) রায়ে বলেছে,“বংশগতভাবে শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক।”
যদিও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন। তাকে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বর্তমানে উত্তর সিরিয়ার ক্যাম্প রোজ শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন শামীমা। তার আইনজীবীরা চাইলে বিশেষ আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবার আপিল করতে পারবেন।