না’গঞ্জে ৩ নারীকে নির্যাতন: ইউপি সদস্য রিমান্ডে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জে তিন নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইউসুফ হোসেনকে দুই দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাহমিদা খাতুন রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। বন্দর উপজেলার দক্ষিণ কলাবাগান এলাকায় শনিবার তিন নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় ইউসুফ হোসেনসহ ১১ জনের নাম উলেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন এক নারী। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইউসুফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতিত এক নারী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সুদে টাকা খাটিয়ে সংসার চালিয়ে আসছেন। কয়েক মাস আগে একই এলাকার জীবন ও উম্মে হানী নামে দুইজনকে তিনি দুই দফায় এক লাখ ৩৭ হাজার টাকা ঋণ দেন।
“স¤প্রতি সেই টাকা ফেরত চাওয়ায় তাদের সঙ্গে বিরোধ বাধে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইউসুফের সহযোগিতা চাইলে তিনি উল্টো আমাকে শাসিয়ে দেন। শনিবার বিকালে জীবন ও তার লোকজন আমার বাড়ি গিয়ে আমাকে ও আমার দুই আত্মীয়কে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটায়।”
মারধরের পাশাপাশি তারা তিন নারীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগ।
ওই নারী বলেন, “একপর্যায়ে তারা আমাদের গায়ের কাপড় খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর বাড়িতে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। তারা আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। আমাদের র্যাবের কাছে দিয়ে দেবে বলেও ভয় দেখায়।”
ঘটনার দিন থানায় গেলে পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “পুলিশ বলেছে ইউসুফ মেম্বারের কথা ছাড়া থানায় মামলা হবে না।”
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সোমবার নারায়ণগঞ্জে যায়। কমিটির সদস্যরা নির্যাতিত তিন নারীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন।
কমিশনের পরিচালক জেলা ও দায়রা জজ আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর বলেন, “তিন নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে।”