November 29, 2024
আন্তর্জাতিক

নববধূকে কাঁধে নিয়েই উত্তাল নদী পেরোলেন স্বামী

হাতে হাত রেখে একসঙ্গে চলার অঙ্গীকার নিয়েছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে বসে। বিপদে-আপদে একসঙ্গে থাকবেন, দিয়েছিলেন সেই প্রতিশ্রুতিও। মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তেমন পরীক্ষার মুখোমুখি হন নবদম্পতি।

বলা হচ্ছে ভারতের বিহার রাজ্যের কিষাণগঞ্জের বাসিন্দা শিবকুমারের কথা। সোমবার (২৯ জুন) তার বিয়ে হয় নেপাল সীমান্তের সিংহীমারি গ্রামের মেয়ে সুনীতার সঙ্গে। পরদিন (মঙ্গলবার) নববধূকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হন তিনি।

এরই মধ্যে ওই এলাকায় শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। বেড়ে যায় গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি নদীর স্রোত। নববধূর হাতে হাত রেখে শিবকুমার ঘাটে পৌঁছালে মাঝি জানায়, এই খরস্রোতে নৌকা টানা অসম্ভব। কিন্তু নবদম্পতির তো ফেরার উপায় নেই! সদ্য বিবাহিত শিবকুমার তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন, স্ত্রীকে কাঁধে নিয়েই নদী পার হবেন।

স্ত্রীকে কাঁধে তুলে স্রোত ভেঙে এগোতে লাগলেন শিবকুমার। লক্ষ্য, পার হওয়ার মতো জায়গা খুঁজে বার করা। তখনও পরনে বিয়ের শেরোয়ানি। পায়ে নতুন জুতা। নতুন বৌ সুনীতার পরনে বিয়ের জোড়। হাতবোঝাই চুড়ি ঝুনঝুন করছে চলার তালে তালে। তিনি আর বাধা দেবেন কী!

এভাবে চলতে চলতে চলতে শেষে মিলল নদীর সোঁতা। সেখানে এক কিলোমিটার চওড়া নদীর স্রোতও তুলনায় কম। সেই পানি ঠেলে একসময় তারা গিয়ে ওঠেন বাড়ির কাছে। হইহই করে ওঠে আগে থেকেই খবর পেয়ে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন।

নদীর বিপদের কথা কিন্তু শিবকুমারের অজানা ছিল না। তিনি বলেন, ‘নদীর গতিপ্রকৃতি ভাল না। কখন কী হবে, কেউ জানে না।’ এ কথা জেনেও স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে পার হলেন কেন? জবাবে সলজ্জ হাসেন নতুন বর। বরযাত্রীরা তখন বলে ওঠেন, ‘ছেলে তো বিয়ের পর প্রথমদিনই বাজিমাত করে দিলো!’

লাজুক হাসি তখন সুনীতার মুখেও।

পারলেন কী করে এতটা পথ নতুন বৌকে কাঁধে করে নিয়ে আসতে? স্রোত ভেঙে হাঁটতে অসুবিধা হল না? মুখে হাল্কা হাসি। ২৬ বছর বয়সী শিবকুমার বলেন, ‘লজ্জা লাগছিল। কিন্তু উপায় তো ছিল না। পানির স্রোত বাড়ছে দেখে মাঝি না করে দিল। আমরা কি তাহলে নদী পেরিয়ে বাড়ি যাব না?’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *