নদী খননে কোটি কোটি টাকা ব্যয়, কারখানা করে খালের প্রবাহ রোধ
মীর এলপিজি’র নামে অভিযোগ
মোংলা প্রতিনিধি: দক্ষিনাঞ্চলের অর্থনৈতিক জোন খ্যাত বাগেরহাটের মোংলায় একদিকে নদী খননের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যায় করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিল্প-কল-কারখানা স্থাপনের নামে নদীর প্রবাহ রোধ করার প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। সরকারী রেকর্ডী ৫০-৬০ ফুট খালের উপর ছোট আকারের কার্ভাট নির্মান করে পানির প্রবাহ রোধ করার একাধিক অভিযোগ পাওযা গেছে। আর এ সকল কাজে সরকারের একাধিক কর্মকর্তার গোপন জোগ সাজসের অভিযোগ উঠেছে।
মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের পানি নিঃষ্কাষন হয় সরকারী রেকর্ডীয় ৫০-৬০ ফুট প্রশস্থ বিদ্যার বাহন খাল দিয়ে। এই খালের অপর প্রান্তে মীর এলপিজি লিঃ নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান সরকারে কোন দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই খালের প্রবাহ রোধ করতে কয়েক ফুট চওড়া কার্ভাট নির্মান করছে। এই কালভার্ট নির্মানের ফলে একদিকে যেমন ৩/৪ গ্রামের পানি নিঃষ্কাশনের অভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। তেমনি ওই এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের এসকল অভিযোগের অন্ত নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে , মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা মৌজার প্রায় ৫০-৬০ ফুট প্রশস্থ বিদ্যার বাহন খালের প্রবাহ রোধ করতে খালের উপর কৃত্রিম বাঁধ নির্মান করা হয়েছে। সেখানে মীর এলপিজি লিঃ এর অর্থায়নে কয়েক ফুট প্রশস্থ আরসিসি ঢালায়ের কালভার্ট নির্মান করা হচ্ছে। আর প্রজেক্টের ইনচার্জ হিসেবে মো. ইউসুফ আলী কাজের তদারকী করছেন। অথচ কিছুদিন আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে মৃত প্রায় এই খালের প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য খনন করা হয়। সরকারী প্রবহমান খালের উপর বাঁধ নির্মান ও অনুমতির কথা জানতে চাইলে প্রজেক্টের ইনচার্জ মো. ইউসুফ আলী জানান, তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং সাইড দেখ ভাল করেন। তবে অনুমতির বিষয়টি তাদের কোম্পানীর আইনজীবী রবিউল আলম সাহেব জানাতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন ইউসুফ।
এদিকে কোম্পানীর আইনজীবী রবিউল আলম জানান, খালের প্রবাহ ঠিক রেখে উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। শুধু মীর গ্রæপ ই নয়, ওই এলাকায় আরও ইন্ডাষ্ট্রি এমনভাবে উন্নয়ন মূলক কাজ করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের সাথে তাদের কোম্পানীর পক্ষ থেকে কথা বললে তারা খালের প্রবাহ ঠিক রেখে কাজ করার মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এব্যাপারে বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় জানান, গত দুই বছর আগে মৃত প্রায় এই খালটি খনন করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সরকার প্রায় কোটি টাকা খরচ করেন। এই খালের উপর মীর এলপিজি লিঃ নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান কালভার্ট নির্মান করে খালকে অনেক ছোট করে ফেলছে। ফলে ওই এলাকায় যেমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। তেমনটি শেহেলাবুনিয়া, মনসা খালী , গাজী খালী ও বিদ্যার বাহন এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শুধু বিশ্বজিৎ রায় নয়, ওই এলাকার কোমেলা বেগম, নাসরিন সুলতানা, মনোতোষ রায়, পরিমল, মুনসুর, আজিজসহ একাধিক ব্যক্তি এই ধরনের অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, বিদ্যার বাহন খালের উপর বাঁধ নির্মান করে মীর এলপিজি লিঃ কালভার্ট নির্মান করছেন বলে তিনি শুনেছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে সার্ভেয়ার পাঠানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।