নগরীর ব্যবসায়ী সাকের হত্যা মামলায় ১৬৪ ধারায় এক আসামির স্বীকারোক্তি
এজাহারভুক্ত ৪ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর
দ. প্রতিবেদক
খুলনা মহানগরীর আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোঃ হোসেন সাকের (৫৫) হত্যা মামলায় সুরজিৎ মন্ডল (২৫) নামের একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রবিবার তাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই খুলনা’র পুলিশ পরিদর্শক একেএম মাহফুজুল হক আদালতে সোপর্দ করেন। এসময় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহীদুল ইসলামের নিকট আসামি সুরজিৎ মন্ডল ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। অপরদিকে মামলার এজাহারভূক্ত আসামিদের মধ্যে ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পিবিআই। গতকাল রবিবার শুনানী শেষে একই আদালত ওই চারজন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলো- হাবিব হোসেন শাহিন (৬০), তার স্ত্রী হাসিনা হাবিব হোসেন গ্লোরিয়া (৫৫), আব্দুল হামিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২১), বসুপাড়া কবরস্থানের মেইন গেটের সামনের তসলিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া তৈয়ব আলি শেখের ছেলে মোঃ সেকেন্দার শেখ (৪৮)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই খুলনা’র পুলিশ পরিদর্শক একেএম মাহফুজুল হক জানান, মোঃ হোসেন সাকের হত্যাকান্ডের পর তার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসামিদের পক্ষে নিতে মিডিয়া হিসেবে কাজ করেছে সুরজিৎ মন্ডল। সে বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা এলাকার বাসিন্দা গোলক মন্ডলের পুত্র। তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নগরীর ৪৬/১ আহসান আহমেদ রোডের বাসিন্দা মৃত. ডা. আলতাফ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন সাকের স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। ২২ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে স্ত্রী সাজিয়া আফরিন হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি ফিরে আসেন সাকের। ২৩জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে খুমেকে করোনা পরীক্ষার জন্য যান এবং বিকেলে বাড়ি ফিরে আসেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেয়ে জন্য খাবার কিনতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ২৪জুন সকালে বাড়ির প্রধান ফটকের ভেতরে ড্রেনের পাশে সাকের (৫৫)’র মৃতদেহ পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনরা। এরপর তারা লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করেন। মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে ২৬জুন তার স্ত্রী স্বামীর মৃত্যু কারন জানতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের আবেদন করেন। একই সাথে সদর থানায় একটি জিডি করেন নিহতের স্ত্রী সাজিয়া আফরিন হোসেন। এঘটনায়পুলিশ শনিবার ২৭ জুন রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সোয়া ৫টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৭জনকে গ্রেফতার করে। ২৮জুন এঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয় যার নং-১৮।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, নগরীর ৪৬/১ আহসান আহমেদ রোডের মৃত. ডা. আলতাফ হোসেনের ছেলে নিহত সাকেরের বড় ভাই হাবিব হোসেন শাহিন (৬০), তার স্ত্রী হাসিনা হাবিব হোসেন গ্লোরিয়া (৫৫), পালিত ছেলে লামীম হোসেন (২১), আব্দুল হামিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২১), হাজী ইসমাইল রোডস্থ পাইকপাড়ার মৃত. আব্দুল জব্বার শিকদারের ছেলে কেয়াটেকার মোঃ ফরহাদ হোসেন (৪৪), ৫৪/৫৫ টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মৃত. কাজী আব্দুর রবের ছেলে শাহিনের ব্যবসায়ীক পার্টনার কাজী শরিফুল ইসলাম (৫৫) ও বসুপাড়া কবরস্থানের মেইন গেটের সামনের তসলিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া তৈয়ব আলি শেখের ছেলে মোঃ সেকেন্দার শেখ (৪৮)। আসামিরা সকলেই খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ