দ্বিতীয় সন্তানের মুখ দেখা হলো না খুলনার লিটনের
বনানীর এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ড
দ: প্রতিবেদক
রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারের আগুনে করুণ মৃত্যু হয়েছে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কোদলা গ্রামের মিজানুর রহমান লিটন (৩৩)। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাগা এ অগ্নিকাণ্ডে লিটনসহ ২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানায়, লিটনের মা-বাবা নেই। পরিবার বলতে স্ত্রী তানিয়া বেগম ও পাঁচ বছরের ছেলে তানিম। স্ত্রী দ্বিতীয়বারের মতো মা হতে যাচ্ছেন। আগামী ১০ এপ্রিল তার সন্তান প্রসবের দিন রয়েছে। কিন্তু অনাগত সন্তানের মুখ দেখার আগেই বনানীতে এফ আর টাওয়ারের আগুনে করুণ মৃত্যু হয়েছে লিটনের। ফলে তার দ্বিতীয় সন্তান বঞ্চিত হলো পিতৃস্নেহ থেকে। শুধু অনাগত সন্তানই নয় লিটনের ৫ বছরের ছেলে তানিমও হলো পিতৃহীন। স্বামীহারা হয়ে অল্প বয়সেই বিধবা হলেন স্ত্রী তানিয়া।
ছাগলাদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলাম বলেন, স্বামীহারা হয়ে অল্প বয়সেই বিধবা হলেন লিটনের স্ত্রী তানিয়া। লিটনের মা-বাবা নেই। এক ছেলে ও স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রী আবার সন্তানসম্ভবা। এই পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন লিটন।
লিটনের ভাইয়ের ছেলে সুমন বলেন, বনানীর এফ আর টাওয়ারের ১০ তলায় হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস নামক একটি ফার্মে কর্মরত ছিলেন তার চাচা লিটন। আগুন লাগার পর সেখান থেকে বের হতে না পেরে তিনি মারা যান। তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে সবাই শোকস্তব্ধ হয়ে যান। তার স্ত্রী এমনিতেই অসুস্থ। তার ওপর লিটনের মরদেহ আসার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। লিটনের মৃত্যুতে এ পরিবারটি সহায়-সম্বল সবই হারালো।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে লিটনের মরদেহ গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায় পৌঁছালে স্ত্রী সন্তানসহ স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তার স্ত্রী স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। একইসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বাদ জুম্মা নামাজে জানাজা শেষে লিটনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
উলেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ অগ্নিকাণ্ডে খুলনার তেরখাদা উপজেলার কোদলা গ্রামের লিটনসহ ২৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আগুনে নিহত হওয়ার পর তার লাশ রাখা ছিল সিএমএইচ হাসপাতালে। সেখান থেকে তার ভাই মো. আলম শেখ লাশ বুঝে খুলনার কোদলা গ্রামে নিয়ে আসেন।