দৌলতপুরে কালা হত্যা মামলার বাদীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা!
দ: প্রতিবেদক
খুলনা নগরীর দৌলতপুরে কালা হত্যা মামলার বাদী নাজমা বেগম (৫৩) কে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে সন্ত্রাসীরা। গত ২৩ ফেব্রয়ারী গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে ডেকে নাজমা বেগমের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৫দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তিনি মারা যান।
নিহত নাজমা বেগমের পরিবার জানান, গত ২০১৬ সালে ৬ মে দৌলতপুর থানার মধ্যডাঙ্গা নগর গ্রামে নূর ইসলাম ভূইয়ার ছেলে রুবেল ভূইয়া ওরফে কালাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ একটি ধান ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। ওই দিন কালার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে রাসেল ওরফে পেচি রাসেল, ইমরান, রাসেল ওরফে মোটা রাসেল, তুহিনসহ আরো আজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের নামে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীরা জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে নাজমা বেগমকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি ও মারধোর করেছে। নাজমা বেগম মধ্যডঙ্গা নগরের খলিল, জলিলসহ হত্যা মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি জিডি করেছে বলে তার অপর ছেলে সাগর ভূইয়া জানান।
গত শনিবার (২৩ ফেব্র“য়ারি) রাত আড়াইটার সময় কয়েকজন সন্ত্রাসী নাজমা বেগমের বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। দরজা ভাঙ্গার শব্দ শুনে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা চোখ-মুখ চেপে ধরে কেরোসিন গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নাজমুল হোসেন নামে এক সন্ত্রসীকে নাজমা বেগম চিনতে পারেন। কেরোসিন ঢেলে আগুন না লাগানোর জন্য নাজমা বেগম নাজমুলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চায়। কিন্তু নাজমুলসহ সাথে থাকা সন্ত্রাসীরা নাজমা বেগমের আকুতি শোনেনি। শেষ পর্যন্ত তার শরিরে কেরোসিন ঢেলে লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। নাজমা বেগমকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গত ২৪ ফেব্রæয়ারী তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার নাজমা বেগম মারা যান।
এ অগ্নিদেগ্ধর ঘটনায় নাজমা বেগমের পুত্র সাগর ভূইয়া একই এলাকার সামসুল হকের ছেলে নাজমুল হোসেন ওরফে বড় নাজমুলসহ আজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনের নামে দৌলতপুর থানায় মামলা করে। পুলিশ নাজমুলকে আটক করেছে। তাকে তিনদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দৌলতপুর থানা ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান।
মামলার বাদী সাগর ভূইয়া জানান, তার ভাই কালা হত্যাকারীরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য মামলার বাদী তার মা নাজমা বেগমকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে।
ওসি কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান, অগ্নিদগ্ধর ঘটনাটি রহস্যজনক। আসামীকে রিামান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাদীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের নাম বলে মামলার তদন্ত কাজে বিঘœ ঘটাচ্ছে।