December 22, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে দুজন সুস্থ : আইইডিসিআর

স্বাস্থ্য খাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ অর্থ মন্ত্রণালয়ের

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর। গতকাল বুধবার মহাখালীতে আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, দেশে নতুন করে কারও মধ্যে কভিড-১৯ ধরা পড়েনি।

আইইডিসিআর রোববার এক ব্রিফিংয়ে দেশে প্রথমবারের মত তিনজনের নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ স¤প্রতি ইতালির দুটি শহর থেকে দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, আমি আপনাদের একটু ভালো খবরই দিতে পারব। গতকাল আমরা যে পরীক্ষা করেছি তাতে তিনজনের মধ্যে দুজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আপনারা জানেন যে পর পর দুবার নেগেটিভ এলে আমরা তাদের ডিসচার্জ করে দিতে পারি। তো তিনজনের মধ্যে দুজন অলরেডি নেগেটিভ।

আমরা আগেও বলেছি, শারীরিকভাবে তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা ছিল না। তারা সুস্থ আছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে প্রটোকল, সে অনুযায়ী আমরা তাদের রিলিজ করে দেব। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে মোট আটজনকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হয়েছে বলে  জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক বলেন, আইইডিসিআরের হটলাইনে তারা গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২২৫টি কল পেয়েছেন, তার মধ্যে ৩ হাজার ১৪৫টি কল ছিল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত। এই সময়ে মোট ২৪ জন আইইডিসিআরে গিয়ে সেবা নিয়েছেন এবং মোট ১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ওই তিনজন ছাড়া আর কারও মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি।

দেশের বাইরে সিঙ্গাপুরে পাঁচজন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইতালিতে এর আগে দুজনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছিল। তাদের মধ্যে সিঙ্গাপুরের চারজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন জানিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, যার অবস্থা ক্রিটিকাল ছিল, তা অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে আক্রান্তদের চিকিৎসার বন্দোবস্তের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে চিকিৎসা সুবিধা স¤প্রসারণে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার এই অর্থ বরাদ্দের কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগ।

অর্থ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবু ইউছুফ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস প্রতিরাধ ও ‘কোভিড-১৯ ’এ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অনুকূলে সচিবালয় অংশে ‘সাধারণ থোক বরাদ্দ’ খাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হল।

এই অর্থের মধ্যে ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ, ১ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা জনসচেতনায় প্রকাশনা কাজে এবং ২ কোটি ৫০ হাজার টাকা কেমিকেল-রি-এজেন্ট খাতে ব্যয় করা হবে।

অর্থ ব্যয়ে কিছু শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থ ব্যয়ের ১০ দিনের মধ্যে কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে, তার বিস্তারিত অর্থ বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া এ অর্থ প্রস্তাবিত খাত (করোনাভাইরাস) ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।

গেল বছরের শেষ দিনে চীনের উহান শহরে নভেল করোনাভাইরাস দেখা দেওয়ার পর এরইমধ্যে শতাধিক দেশে তা ছড়িয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার মানুষ, আর এতে মৃত্যু হয়েছে ৪২৯৬ জনের।

গত রোববার বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্তের তথ্য জানায় সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। এছাড়া এই ভাইরাস সংক্রমণের সন্দেহে আটজনকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হয়েছে।

ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই ভাইরাস মোকাবেলায় গত ৫ মার্চ ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *