October 18, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

দেশে আদর্শের রাজনীতি ধ্বংস করে খুনের রাজনীতি কায়েম করেন জিয়া

জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বিএনপি এদেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসন করেছিলেন। তাদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করেন। রাজনীতিতে অযোগ্যদের পদায়ন করেন। তিনি আদর্শের রাজনীতি ধ্বংস করে খুনের রাজত্ব কায়েম করেন।’

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমানের অবৈধ ক্ষমতা দখল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার নামে “হ্যাঁ-না নাটক” করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। হাইকোর্ট এটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এজন্য বিএনপির সৃষ্টিটাও অবৈধ হয়ে যায়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে তো বটেই, সারাবিশ্বে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘৃণিত, নিন্দিত। রাজনৈতিক ইতিহাসে নিষ্ঠুর, নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ। ১৫ আগস্টে শুধু একটা পরিবারকে হত্যা নয়, এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের ইতিহাসকে একেবারে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যেন কারবালার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো ৩২ নম্বরে। খুনিরা এমন একটি মানুষকে হত্যা করলো, যে মানুষ তাদের দেশ দিলো, স্বাধীনতা দিলো।’

তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই ১৫ আগস্টের খুনিদের মদত দিয়েছে। যেভাবে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন, সেভাবে খালেদা জিয়াও পুনর্বাসন করেছেন। এরশাদও খুনিদের মদত দিয়েছেন পুরস্কৃত করেছেন।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খুনি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, এই হত্যার যাতে বিচার না হয়, সেই ব্যবস্থাও করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ডালিমসহ অন্যদের যখন বিদেশে পাঠানো হলো, অনেক দেশ তাদের গ্রহণ করেনি। যেসব দেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সপক্ষে ছিল, তারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কূটনীতিক হিসেবে মেনে নিতে নিতে পারেনি।’

কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে বিএনপি নেতারা নতুন সাফাই গাইতে শুরু করেছেন বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলছেন, ৭৫ সালে তো বিএনপি গঠনই হয়নি, তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যায় বিএনপি কীভাবে জড়িত হলো? জিয়াউর রহমানের ভূমিকাই বলে দেয় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে তারা কীভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগের যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, তারাও পরবর্তী সময়ে জিয়ার সঙ্গে গেছে। অনেকে এখনও বেঁচে আছে, বড় বড় কথাও বলে!’

সরকারপ্রধান অভিযোগ করেন, ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সব আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে দেওয়া হয়েছিল। একমাত্র বিটিভি ছিল। সেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা যেত না। একেবারে ইতিহাস থেকেই মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু অবিনশ্বর। তিনি আজ জীবন্ত ইতিহাস। তিনি বেঁচে আছেন, বাঙালির হৃদয়ে, বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের মনে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এমপি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সহ-সভাপতি জাহানারা বেগম, দক্ষিণের সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, উত্তরের যুগ্ম সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক কামাল চৌধুরী অন্যান্যের মধ্যে সভায় বক্তৃতা করেন।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *