দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে খুললো
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে খুলে দেওয়া হল ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতু হলে তার সর্বোচ্চ সুবিধা যাতে দেশের মানুষ পায়, সেজন্য আধুনিক মহাসড়কের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রেখে এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান।
একই সঙ্গে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ছয় লেইনের তৃতীয় কর্ণফুলী (শাহ আমানত সেতু) সেতু অ্যাপ্রোচ সড়ক এবং ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে নির্মিত ২৫টি সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে এসব প্রকল্পের নানা দিক নিয়ে তথ্য চিত্র তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এশিয়ান হাইওয়ে করিডোরের অন্তর্ভুক্ত ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি-মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশে এই এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত হবে পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে, যা বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর চার কিলোমিটার মূল কাঠামো নির্মাণে গত মঙ্গলবার বসানো হয়েছে ২৬তম স্প্যান।
দুই পাশে সার্ভিস লেইনসহ এই এক্সপ্রেসওয়েতে লেইন রয়েছে মোট ছয়টি। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেলে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা আসা-যাওয়ায় এক ঘণ্টাও লাগবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিশ্বাস, এই সড়ক ইউরোপের অনেক সড়ককে হার মানাবে।
১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই এক্সপ্রেসওয়েতে ক্রসিং এড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করতে ৪৪টি কালভার্ট, ১৯টি আন্ডারপাস, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু, পাঁচটি ফ্লাইওভার, দুটি ইন্টার চেইন, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস রয়েছে।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড।
৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার, আর পদ্মা সেতুর অন্য পাড়ে পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা-পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দাদের ঢাকা যাতায়াত সুগম হবে।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ছয় জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষ সরাসরি এই এক্সপ্রেসওয়েতে উপকৃত হবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য।