দূতাবাসে লুকিয়ে থেকেই দুই সন্তানের বাবা হলেন অ্যাস্যাঞ্জ
গ্রেপ্তার এড়াতে লন্ডনে একুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে থাকাকালে তার পক্ষে আইনি লড়াই চালানো এক আইনজীবীর সঙ্গে সম্পর্ক থেকে দুই সন্তানের জনক হয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাস্যাঞ্জ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, ৩৭ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকান আইনজীবী স্টেলা মরিস নিজেই তাদের এই তথ্য দিয়েছেন।
সুইডেনে যৌন নিপীড়নের মামলায় অ্যাস্যাঞ্জকে হস্তান্তরের বিরোধিতায় যুক্তরাজ্যে আইনি লড়াই চালান এই আইনজীবী। ২০১৭ সাল থেকেই অ্যাস্যাঞ্জের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল বলে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এই দম্পতির এক ও দুই বছরের দুই সন্তান রয়েছে। দুজনের ক্ষেত্রেই মরিসের গর্ভধারণ হয়েছে অ্যাস্যাঞ্জ দূতাবাসে লুকিয়ে থাকাকালেই।
প্রতিবেদনে অ্যাস্যাঞ্জের সঙ্গে একটি শিশুর ছবি দেওয়া হয়েছে, যাকে বলা হয়েছে তাদের বড় ছেলে।
অ্যাস্যাঞ্জকে দেখাতে শিশুটিকে লুকিয়ে দূতাবাসে নেওয়া হয়েছিল বলে ডেইলি মেইলের ভাষ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই সন্তানই ব্রিটিশ নাগরিক। তাদের জন্মের সময় দূতাবাস থেকে ভিডিও লিঙ্কে যুক্ত ছিলেন অ্যাস্যাঞ্জ।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সালে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।
সুইডেনের সেই মামলা খারিজ হলেও ব্রিটিশ আইন ভাঙায় আবার গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে অ্যাসাঞ্জ বের হতে পারছিলেন না। সাত বছর পর গত বছর একুয়েডর দূতাবাস থেকে অ্যাস্যঞ্জকে ধরে নিয়ে আসে ব্রিটিশ পুলিশ।
বর্তমানে ব্রিটেনের কারাগারে বন্দি অ্যাস্যাঞ্জকে কম্পিউটার হ্যাকিং ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর নিয়ে আইনি লড়াই চলছে। অ্যাস্যাঞ্জের সমর্থকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সেখানে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না।
সন্তানদের বিষয়ে এখন মুখ খোলার কারণ হিসেবে স্টেলা মরিস বলেছেন, কারাগারে অ্যাস্যাঞ্জের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয় কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।
“আমি জুলিয়ানকে খুব ভালোবাসি এবং আমি তাকে বিয়ে করার জন্য অপেক্ষা করছি,” তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে ডেইলি মেইল।