দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় মুক্তিযোদ্ধা সেলিমকে খুন, দাবি এলাকাবাসীর
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতার কারণেই পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করছে তার এলাকার মানুষ। সেলিম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রূপপুর মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি করেন পাকশী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, আমি আর সেলিম খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম। এক সাথে কয়েকদিন আগেও রাজশাহী থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসি। তার একটাই সমস্যা ছিল, সেটা হল অন্যায়ের সাথে সে কোনোদিন আপস করে নাই। অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করাই কাল হল সেলিমের। বুধবার রাতে ঈশ্বরদীর রূপপুর বিবিসি বাজার থেকে ফেরার পর বাড়ির দরজায় সেলিমকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আগে পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিছু দিন ধরে তিনি দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে স্বজনরা জানান।
মানববন্ধনে সেলিমের মেয়ে সানজানা রহমান তোপা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা বর্তমান রাজনীতির সাথে একমত না হওয়ায় নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন। তারপরও কেন সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করল? আমি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। মানববন্ধনে এলাকাবাসীসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন। তারা অবিলম্বে খুনিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। এলাকাবাসী জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে স্থানীয় একটি চক্রের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন সেলিম।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির ভুয়া তালিকা দিয়ে একটি চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এর প্রতিবাদ করছিলেন সেলিম। সেজন্যই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল। তবে পুলিশ খুনি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ঈশ্বরদী থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, পুলিশ খুনি শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তার করার পর খুনের উদ্দেশ্য জানা যাবে।