November 25, 2024
জাতীয়

দুই নবজাতক চুরির দায়ে দু’জনের যাবজ্জীবন

 

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

২০০৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল­া থেকে দুই নবজাতককে চুরি করে পাচার করা হয়েছিল। সেই দায়ে গতকাল মঙ্গলবার দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। এই অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে তাদের। ঢাকার তৃতীয় মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার এ রায় দেন।

দণ্ডিত দুই আসামি হলেন সিরাজগঞ্জের ঝর্ণা বেগম ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল­ার চাঁনমারা বস্তির মানিক। রায় ঘোষণার পর আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রায়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দারোয়ান আব্দুল মতিন এবং বিশেষ আয়া শিলাকে খালাস দেয়া হয়েছে। শিলা পলাতক।

ঢাকা মেডিকেল থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগে ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার সবুজবাগ থানায় মামলা করেন শিশুর বাবা মনিরুল ইসলাম। ওই মামলায় আসামি ঝর্ণা, মানিক, শিলা, মতিনকে অব্যাহতির সুপারিশ দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। আসামিরা তখন ঢাকার পঞ্চম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতিও পান।

কিন্তু পরে পুলিশ খিলগাঁও থানার রামপুরা ওয়াপদা রোডের একটি বাড়ি থেকে এক নবজাতক শিশুসহ এক নারীকে আটক করে। ওই নারী স্বীকার করেন যে, শিশুটি তার নিজের নয়। সেখানে আরও একটি শিশুর সন্ধান মেলে। পরে দুই নবজাতক চুরি ও পাচারের অভিযোগে ২০০৬ সালের ১২ জানুয়ারি খিলগাঁও থানায় মামলা করেন উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল কবীর।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, ২০০৬ সালের ৬ জানুয়ারি খিলগাঁও এলাকায় ঝর্ণা বেগম আট থেকে দশ দিন বয়সী ছেলে নবজাতকসহ আটক হন। ঝর্ণা বেগম তখন স্বীকার করেন, ওই বাচ্চা তার নয়। এ ছাড়া তার হেফাজতে আরও একটি কন্যা নবজাতক আছে রামপুরায়। তখন পুলিশ রামপুরা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে। ঝর্ণা জানান, ছেলে শিশুটি তিনি নিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল­ার মানিক মিয়ার কাছ থেকে। পরে মানিক মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর কন্যাসন্তানটি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দারোয়ান আবদুল মতিনের কাছ থেকে নিয়ে আসেন বলে পুলিশকে জানান।

তদন্ত শেষে খিলগাঁও থানার এসআই আবুল খায়ের ঝর্ণা বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২৬ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, নবজাতক দুটির প্রকৃত অভিভাবক পাওয়া যায়নি। মামলায় ১৫ জনের মধ্যে নয়জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। ঝর্ণাকে গ্রেফতার করার পর আদালতে এক প্রতিবেদন দিয়ে পুলিশ জানিয়েছিল, নবজাতক সংগ্রহ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার করেন ঝর্ণা বেগম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দুবাই ছিলেন।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *