দিল্লি থেকে ৩০০ কিমি দূরে হেঁটে রওনা, পথেই মৃত্যু
ভারতজুড়ে তিন সপ্তাহের লকডাউন শুরু হওয়ার পর রাজধানী দিল্লি থেকে হেঁটে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি, কিন্তু ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে মধ্যপ্রদেশের বাড়িতে পৌঁছানোর আগে পথেই তার মৃত্যু হয়েছে।
৩৮ বছর বয়সী এই ব্যক্তির নাম রানবীর সিং, তিনি দিল্লিতে ডেলিভারি এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ দিন ব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ভারতজুড়ে লাখ লাখ দিনমজুর কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা এসব লোক টাকার অভাবে খাবারও কিনতে পারছেন না, হারিয়েছেন আশ্রয়; ফলে গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা।
দিল্লি থেকে বাড়ির পথে রওনা হওয়া এমন কয়েক হাজার লোকের একজন ছিলেন রানবীর। সব গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েকশ কিলোমিটার দূরে বাড়ির পথে হেঁটেই রওনা হয়েছিলেন তিনি।
রানবীবের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলায়। দিল্লি থেকে তার গ্রামের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৩২৬ কিলোমিটার। দিল্লি থেকে মহাসড়ক ধরে উত্তর প্রদেশের আগ্রা পর্যন্ত প্রায় ২৩৭ কিলোমিটার যাওয়ার পর কাহিল হয়ে পড়েন তিনি।
স্থানীয় এক দোকানদার তাকে চা ও বিস্কুট খেতে দেন, কিন্তু তারমধ্যেই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তার। এ সময় নিজ গ্রাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের আশপাশের রাজ্যগুলো থেকে রাজধানীতে কাজের জন্য আসা হাজার হাজার লোক শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার জন্য জড়ো হয়েছিল দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের কারণে বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে শত শত কিলোমিটার হেঁটে বাড়ির পথে রওনা হন এদের অনেকেই। এদের অনেকের সঙ্গে স্ত্রী, সন্তানরাও ছিলেন।
উত্তর প্রদেশ ও দিল্লি সরকার বাসের ব্যবস্থা করে এদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো শুরু করে। তারা এক হাজার বাসের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার, আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ২০০ বাসের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন।