দলবেঁধে ধর্ষণ: ওসিসহ খুলনা রেলপুলিশের ২ সদস্য প্রত্যাহার
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো এক তরুণী আদালতে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলার পর খুলনা রেলপুলিশের ওসিসহ দুজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এরা হলেন- খুলনা জিআরপি (রেলওয়ে) থানার ওসি ওসমান গণি পাঠান ও এএসআই নাজমুল হক।
‘ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের’ স্বার্থে বুধবার তাদের খুলনা জিআরপি থানা থেকে পাকশি জেলা রেলওয়ে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় বলে কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ জানিয়েছেন।
২১ বছর বয়সী ওই তরুণীর অভিযোগ, তাকে শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়। রাতে রেলওয়ে থানায় ওসি ওসমান গনি পাঠান, এসআই গৌতম কুমার পাল, এএসআই নাজমুল হক এবং কনস্টেবল মিজান ও হারুন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
মাদক আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার ওই তরুণীকে খুলনার মহানগর হাকিম আতিকুস সামাদের আদালতে তোলে রেলওয়ে পুলিশ। সেখানেই মেয়েটি বিচারকের সামনে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ধরেন।
অভিযোগ শুনে বিচারক মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সোমবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মেয়েটির কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনা তদন্তে সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
ফিরোজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, খুলনা জিআরপি থানার ওসি ওসমান গণি পাঠানসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এক নারীর তোলা ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত তারা মঙ্গলবার শুরু করেছেন।
“তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাদের ক্লোজড করা হয়েছে। বাকি তিন পুলিশ সদস্যের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”
তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধর্ষণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
ওই তরুণীর স্বজনরা বলছেন, ২ অগাস্ট সন্ধ্যায় ওই তরুণী যশোর থেকে ট্রেনে করে খুলনায় পৌঁছান। স্টেশনে নামার পর রেল পুলিশের সদস্যরা তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে।
রাতে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণের পর ‘শনিবার পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ’ গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে তোলে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওসি মোটা অংকের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন বলেও তাদের দাবি।
তবে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি ওসমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই নারীকে মহিলা এসআই ও মহিলা কনস্টেবল পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে। রাতে তিন নারী পুলিশসহ আট পুলিশ সদস্য থানায় পাহারায় ছিল সেখানে তাকে ধর্ষণের কোনো সুযোগ নেই।