ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দিন: বিএনপি
নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন সরকারি ত্রাণসামগ্রী আত্মসাৎ করছে অভিযোগ করে বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খখলা বাহিনীর হাতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রোববার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের মতো এতো বড় মহামারির মধ্যেও ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজরা ত্রাণ ও স্বল্পমূল্যের চাল আত্মসাৎ করছে। ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ থাকলেও এই করোনা পরিস্থিতিতেও থেমে নেই ত্রাণের চাল চুরি। চাল চুরির ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই বেশি জড়িত।”
গত নয় দিনে অন্তত দুই হাজার ২৬৪ বস্তা ত্রাণের চাল চুরির খবর দিয়ে তিনি বলেন, “তাই আমরা আবারো দাবি করছি, অবিলম্বে ত্রাণের চাল বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে দ্রুততার সাথে ত্রাণের চাল বিতরণ করুন। তাতে হয়তো হৃতদরিদ্র, বেকার শ্রমিকারা উপকৃত হবে এবং জনগণের মধ্যে স্বস্তি আসবে।”
পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে বিভিন্ন জেলায় ত্রাণসামগ্রী চুরির একটি তালিকাও তুলে ধরেন রিজভী।
“গত দুই সপ্তাহ ধরে পত্রিকার পাতাজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চাল চুরির খবর প্রকাশিত হলেও এই পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির খবর আমরা পাইনি। যার কারণে এই লুটেরা গোষ্ঠি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের লাগাম এখনই টেনে ধরুন। জাতির এই ক্রান্তিকালে যারা গরীবের হক মেরে খায় তারা দেশের শত্রু এবং মানবতার শত্রু।”
রিজভী বলেন, এনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাধ্যমতো জনগণের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন শুক্রবার থেকে দেশের ৮৪টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই বিতরণ শুরু করেছে।”
বিদ্যুৎ খাতে সরকারের উন্নয়ন সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি বলেন, “তারা (সরকার) দেশের এতো উন্নয়ন করেছে, বিদ্যুতের উন্নয়নে দেশ নাকি আলোয় ঝলোমল। অথচ এই করোনা দুযোর্গে বিদ্যুতের অভাবে কীট উৎপাদন করতে পারছে না গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।”
‘কতর্ব্যরতে চিকিৎসক-নার্সদের হোটেলগুলোতে থাকার দাবি’
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘‘ যেভাবে হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই ডাক্তারদের সাথে বিতণ্ডা পরিহার করে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতাল, বেড, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রি নিশ্চিত করতে হবে।
“আমি বলতে চাই, সবচাইতে বিপদজনক পরিস্থিতিতে ডাক্তার-নার্সরা মানবতার পক্ষে কাজ করছেন। তারা হাসপাতালে যে ডিউটি দেন, সেই ডিউটি শেষ করে তারা যাতে কোথায় থাকার জায়গা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।”
‘‘দেশের বড় বড় যে হোটেলগুলো আছে সেই হোটেলগুলোতে যদি তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে সেখানে তারা প্রয়োজনীয় যেসব পোশাক পড়েন তা জীবাণুনাশক করে কাজে যেতে পারেন। ওই পোশাক নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসলে নানাভাবে সংক্রমিত হতে পারে। বিভিন্ন হোটেলগুলোতে ডাক্তার-নার্সদের থাকার ব্যবস্থা করা দরকার এবং অন্যান্য হোটেলগুলোতে কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের উচিত।”