January 21, 2025
আঞ্চলিক

তেরখাদায় সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে সর্বশান্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ

আসলাম শেখ, তেরখাদা

খুলনা জেলার অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত জনপদ নামে পরিচিত তেরখাদা উপজেলা সদরসহ ৬ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় সুদ ও দাদন ব্যবসার জালে জড়িয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে হাজার মানুষ। এখানকার শতকরা ৮৫ভাগ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। তাছাড়া নি¤œবিত্ত, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও অসহায় পরিবারের লোকজন বেকায়দায় পড়ে উপায়ন্তর না পেয়ে সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ভীড় জমায়। তখন সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীরা গরীব, দিনমুজুর ও অসহায় পরিবারের  লোকদের মাঝে চড়া সুদ দেয়। এই সুদের কিস্তির টাকা দিতে দেরি হলে অনেক সময় সুদে ব্যবসায়ীরা আজে বাজে বকে। কিস্তির টাকা দিতে দেরী হলেই চক্রবৃদ্ধি সুদ গুনতে হয়। পর্যায়ক্রমে সেটি আসল (সাদা) টাকায় রুপান্তরিত করে।

সুদে ব্যবসায়ীরা সুদের হার বাড়াতে বাড়াতে  দেনাদারদের দেউলিয়া করে দেয়। আর এ কারণে দেনাদারদের পরিবারে নেমে আসে চরম দুর্দশা। সুদে ও দাদন ব্যবসায়ীদের কড়া চাপে দিনমজুর পরিবারের সদস্যরা খোঁেজ সুদ পরিশোধের পথ। অনেকে আছে যারা তাদের সামান্য জমাজমি বন্ধক রেখে, আবার অনেকে সহায় সম্বল বিক্রি করে সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করে। এসব চক্রবৃদ্ধি সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে অনেকে দেওলিয়া বনে যাচ্ছে। দেনাদার পরিবারের সন্তানদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন বাসস্থান, খাদ্য, পোশাক, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানাবিধ সমস্যা লাঘব করবে কে? সাধারণ মানুষের জীবন ধারণের উপায় সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের হাতে। যুগ যুগ ধরে সুদে কারবারীদের জমজমাট সুদের ব্যবসা চলে আসলেও ব্যবস্থা নেয় না কেউ। কারো চোখ পড়েনা অসহায় গরীব পরিবারের সদস্যদের অসহনীয় দুঃখ দুর্দশা। সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের  সুদের জালে জড়িয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। সুদে মহাজনরা সুদ ব্যবসা করে  কোটি টাকার মালিক হচ্ছে।

বছরের পর বছর নয়, যুগের পর যুগ ধরে তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বসবাসকারী সুদ ও দাদন মহাজনরা পাকা ইমারক নির্মাণ করে বহাল তবিয়তে আছে। দাদন ও সুদ ব্যবসায়ীদের চলাফেরার সাথে অন্য কারো চলাফেরা মিশেনা। এদের সাথে বাজারের কোন কিছু  কেনাকাটা করে পারা যায় না। কাঁচা টাকার কাছে হার মেনে যায়। সুদে ও দাদন মহাজনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন সচেতন মহল।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *