তেরখাদায় পারিবারিক কলহে ঘুমন্ত শিশুকে কুপিয়ে হত্যা, সৎ মায়ের স্বীকারোক্তি
দ. প্রতিবেদক
খুলনার তেরখাদায় পাঁচ বছরের শিশু তানিশা আক্তারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার সৎ মা মুক্তা বেগম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (১ম) আলিফ রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেয়।
জানা গেছে, তানিশার বাবা তেরখাদার আড়কান্দী গ্রামের খাজা শেখ বাংলাদেশ আনসার ব্যাটালিয়নে কর্মরত। সাত বছর আগে একই উপজেলার আক্কাস শেখের মেয়ে তাসলিমাকে বিয়ে করেছিলেন। পরে দাম্পত্য কলহের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বছর দেড়েক হলো মুক্তা বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন খাজা শেখ। কিন্তু কোনোভাবেই শিশু তানিশাকে মেনে নিতে পারছিলেন না মুক্তা বেগম।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময় তানিশা বাবার বাড়িতে এলে নির্যাতন করতো মুক্তা বেগম। সোমবার তানিশা বাবার বাড়িতে আসে। রাতে বাবা খাজা শেখ বাড়িতে ছিলেন না। তানিশা রাতে দাদির কাছে ঘুমায়। সেখান থেকে মুক্তা তাকে উঠিয়ে নিজের কাছে নিয়ে যায়। রাতে ঘুমন্ত তানিশাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় মুক্তা। তানিশার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে রক্ত দেখে তেরখাদা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মুক্তাকে হাতেনাতে আটক করে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্ত মাখা ধারালো দা। শিশুটিকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তানিশাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সফিক জানান, শিশু তানিশার সৎ মায়ের সাথে অন্য কোনো পুরুষের সম্পর্ক আছে এমন সন্দেহে স্বামীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদের জের হিসেবে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন। আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রাথমিকভাবে তার সৎ মা মুক্তা খাতুন হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ