তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকা উচিত নয় : প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) থাকবে কি, থাকবে না- তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে একটি প্রকল্প অনুমোদনের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা রাখা না রাখার বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে। তিনবছর আগে ২০১৬ সালে সরকার প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিলে প্রাথমিক সমাপনী বিষয়টি সামনে আসে।
সে সময় প্রাথমিকের এই পরীক্ষা না নেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিলেন তখনকার প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। তবে মন্ত্রিসভায় বিষয়টির সুরাহা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রাথমিক সমাপনী বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচিও পালন করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পরের বছরই জাতীয় সংসদে সে সময়কার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার মতো পিইসি বাতিলের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার প্রচলন শুরু হয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয় জেএসসি পরীক্ষা।
মঙ্গলবার একনেক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দনকরণ প্রকল্প’ অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকা উচিত নয় বলে মত দিয়েছেন। এছাড়া প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল কিংবা কী করা যায়, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের পরীক্ষার পদ্ধতি না রাখার বিষয়ে গত মার্চেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৈঠকে উপস্থিত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের চাপ দিয়ে নয়, কিভাবে আনন্দের সাথে পড়ার পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থার উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই। ক্লাস পারফরম্যান্স রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসের জন্য নির্বাচন করা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিষেশজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেন।