তৃণমূলে আ’লীগকে শক্তিশালী করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতীয় সম্মেলন ২০-২১ ডিসেম্বর
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
তৃণমূলে দলকে শক্তিশালী করার আহŸান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নিয়মিত সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে গতিশীল রাখতে হবে। নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকতে হবে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এরপর তার সভাপতিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়।
সভা সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দলটির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এটি আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হবে।
আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে উলেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই আস্থা ধরে রাখতে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা বিরোধী দলে থাকলেও দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে যে দল সংগ্রাম করে, ত্যাগ স্বীকার করে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে, যাদের আন্দোলনের সংগ্রামের ফলে স্বাধীনতা, সেই দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। আর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যারা ক্ষমতায় আসে তারা নিজেদের ক্ষমতা নিশ্চিত করে নিজেদের ভাগ্য গড়ার কাজে ব্যস্ত থাকে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে, দেশ ও জাতির কল্যাণে সব সময়ই সংগঠনটি নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশ যা অর্জন করেছে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। এখন বাংলাদেশ নিয়ে সারাবিশ্বের আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে।
এগিয়ে যাওয়ার পথে নানা বাধা আসে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো রয়েছেই, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও রয়েছে। দেশে জঙ্গিবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস করার অপচেষ্টা হয়েছিল, সরকার তা কঠোর হাতে দমন করেছে। আগামীতেও এই মনোভাব অব্যাহত থাকবে। একইভাবে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সফলতা ও পদক্ষেপগুলো তুলে শেখ হাসিনা বলেন, এর সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে এবং তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। সে লক্ষ্যে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে উলেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় আওয়ামী লীগ একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা বিরোধী দল বা সরকারে থাকুক, আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা কী হবে, দেশের মানুষের জন্য কী করবো, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কী করবো, সে বিষয়ে সেই পরিকল্পনা সবসময় আগে থেকে নিয়ে থাকে এবং যখনই সরকারে আসে তখন তা বাস্তবায়ন করে।
আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীকে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার আহŸান জানিয়ে দলীয় সভাপতি আরও বলেন, শুধু নিজে কী পেলাম, সেটা না ভেবে দেশ ও জাতিকে কী দিতে পারলাম, সেটাই বড় কথা। সবাই যার যার জায়গা থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে দ্রুতই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবো, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারবো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।