তৃণমূলের কাউন্সিলেও বাধা দেওয়া হচ্ছে: বিএনপি
বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল আদালতের আদেশে স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তৃণমূলের কাউন্সিল করতেও তারা বাধা পাচ্ছেন।
শুক্রবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “শুধু ছাত্রদলের কাউন্সিলই নয়, বিএনপির তৃনমূল পর্যায়ের কাউন্সিল অনুষ্ঠানেও সরকার বাধা দিচ্ছে।”
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে শনিবার কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির বিদায়ী ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর একটি আবেদনে বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ নুসরাত জাহান কাউন্সিল আয়োজনে স্থগিতাদেশ দেন।
আদালতের নোটিস পাওয়ার পর কাউন্সিল আয়োজনে যুক্ত বিএনপি নেতারা রাতে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন। পরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ছাত্রদলের কাউন্সিলে স্থগিতাদেশ দেওয়া গভীর চক্রান্তমূলক। সরকারের কারসাজিতেই এহেন আদেশ প্রদান করা হয়েছে।”
শুক্রবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বাধীনতা ফোরামের মানববন্ধনে অংশ নিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আজকে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি নেই, আমাদেরকে রাজনীতি করতে দেয়া হচ্ছে না। একতরফা সব কিছু চলছে।”
বিএনপিকে ‘সুসংগঠিত করার জন্য’ বিভিন্ন পর্যায়ে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তৃণমূলে কাউন্সিল করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা মনে করি, আমাদের যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, আমাদের যে গণতান্ত্রিক চর্চার চেষ্টা- এটাতেও সরকার নানাভাবে বাধা দিচ্ছে।”
‘রাজস্বভাণ্ডার শূন্য বলেই টোল’
মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্তে সরকারের অনড় অস্থানের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় টোল হাইওয়ে আছে, সেই হাইওয়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে দেওয়া হয়। তারা তাদের টাকায় সেই হাইওয়ে নির্মাণ করে এবং টোল নিয়ে তারা তাদের মূলধন ও লাভ নিয়ে যায়।“কিন্তু বাংলাদেশের মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে জনগণের টাকায়। আর গাড়ি এসব মহাসড়কে চলার জন্য সকল প্রকার রোড ট্যাক্স দেয়। তাহলে আবার টোল কেন? অর্থাৎ দেশের রাজস্ব ভাণ্ডার এতই শূণ্য যে হাইওয়ে থেকে টোল নিয়ে সরকার চালাতে হচ্ছে।”
লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হতে বসেছে মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আজকে বাংলাদেশ সরকারের দেশ চালানোর টাকা নাই। নানাভাবে ভ্যাট সম্প্রসারণ করে, জনগণের ওপর নানা রকম নির্যাতন করেও তারা রাজস্ব বৃদ্ধি করতে পারছে না।
“তারা নিজস্ব লাভের জন্য বড় বড় প্রজেক্ট করে মেগা কমিশন নিয়ে এখন আটকে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে যা উদ্ধৃত্ত টাকা আছে তা সরকারকে দিয়ে দিতে হবে। তাহলে আগামীতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো চলবে কীভাবে?”
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ চাইলে দেশের ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই’ মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই মানবন্ধনে সভাপতিত্ব করে সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শাহ নেছারুল হক, সাঈদ আহমেদ আসলাম, ফরিদউদ্দিন, কাজী মনিরুজ্জামান, মিয়া মো. আনোয়ার, সাঈদ হাসান মিন্টু, ইসমাইল তালুকদার খোকন, জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয় দলের এহসানুল হুদা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।