তুষারধসে ১৮ ঘণ্টা চাপা থেকেও বাঁচল বালিকা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে তুষারধসের নীচে ১৮ ঘণ্টা বরফ চাপা থাকার পরও জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১২ বছরের বালিকা শামিনা বিবিকে। তাদের বাড়ি চাপা পড়েছিল বিশাল তুষারধসে। সেখানে একটি ঘরে বরফে আটকা পড়ে থেকে অসহায়ের মতো কীভাবে সাহায্য চেয়ে টানা চিৎকার করে গেছেন সে অভিজ্ঞতার কথা রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন শামিনা।
বলেছেন, উদ্ধার পাওয়ার আগ পর্যন্ত জীবনের কোনো আশা নেই বলেই মনে হয়েছিল তার। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকায় সোমবারের তুষারধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে অন্তত ৭৪। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। হিমালয়ের এ অঞ্চলে আবহাওয়া বিপর্যয় প্রায়ই ঘটলেও এবারের তুষারধসে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা স¤প্রতি কয়েকবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ভারত শাসিত কাশ্মীরেও হয়েছে তুষারধস। তবে পাক শাসিত কাশ্মীরে বিশেষ করে নীলম উপত্যকায়ই তুষারধসে পরিস্থিতি অনেক বেশি শোচনীয়। সেখানকার বাকওয়ালি গ্রাম থেকে শামিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার সঙ্গে আরো অনেককেই ওই এলাকা থেকে আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই শামিনা বললেন, ভেবেছিলাম আমি মরেই গেছি। শামিনার মা শাহনাজ বিবি বলেছেন, মেয়েকে ফিরে পাওয়াটা তার কাছে অলৌকিক ব্যাপার । বরফের নীচ থেকে কোনোমতে বেরিয়ে আসার পর তিনি ও তার ভাই ভেবেছিলেন শামিনাকে আর জীবন্ত ফিরে পাবেন না।
এক ছেলে ও এক মেয়েকে হারিয়েছেন শাহনাজ। শামিনার পা ভেঙেছে, মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়েছে। পরিবার ও গ্রামের আরও কয়েকজনকে নিয়ে তিনতলা বাড়িটিতে ছিলেন শামিনা। আচমকা বিরাট তুষারধসে চাপা পড়ে যায় গোটা বাড়ি। কমপক্ষে ১৮ জন মারা যায়।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশজুড়ে তুষারধস কবলিত এলাকাগুলোতে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরে তুষারধসে মৃতের সংখ্যা ৮ জন।