তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে
বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও তা কমতে শুরু করেছে। ফলে লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।
রোববার (২১ জুন) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের (৫২ দশমিক ৬০ সে.মি.) চেয়ে ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে গত শনিবার (২০ জুন) ভোর থেকে পানি প্রবাহ কয়েক দফায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছিল। দিনভর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহের ফলে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১৯ জুন) রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ হঠাৎ বাড়তে থাকে। পরদিন সকালে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বামতীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে যায় কৃষকের ফসল। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। দিনভর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে পুনরায় কমতে শুরু করে। রোববার (২১ জুন) সকালে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তার পানি প্রবাহ।
তিস্তার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নীচে নেমে আসায় বন্যা পরিস্থিতিও অনেকটাই উন্নতি ঘটেছে। এ বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। বন্যার পানিতে তালিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির বাদাম, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত। পানির স্রোতে ভেসে গেছে মৎস্য চাষিদের স্বপ্ন। কয়েক শত পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষিরা।
এদিকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তিস্তার বাম তীরের সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড়, চন্ডিমারী, বালাপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
তিস্তা ব্যারেজের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত থেকে বাড়তে শুরু করে তিস্তার পানি প্রবাহ। শনিবার সকাল থেকে দিনভর বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোববার সকাল ৬টা থেকে পানি নেমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে।