তিনের রথে অনেক দূরে যেতে চান সাকিব
ক্রীড়া ডেস্ক
বোঝাতে হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেকে। শুরুর সাফল্য সহজ করে দিয়েছে পথচলা। তবে এখনই তৃপ্ত হচ্ছেন না সাকিব আল হাসান। তিন নম্বরে উঠে আসার পর থেকে যে সাফল্য যাত্রা শুরু হয়েছে, সেই পথ ধরে অনেক দূর এগোতে চান বাংলাদেশের অলরাউন্ডার।
তিন নম্বরে নেমেই শনিবার কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৯ বলে ১২১ রানের ইনিংস খেলেছেন সাকিব। বিশ্বকাপে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। তিনে খেলেই এবারের বিশ্বকাপে আগের দুই ম্যাচে সাকিব করেছেন ৭৫ ও ৬৪। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তিনিই।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার প্রমাণের কিছু এমনিতে ছিল না। তবে তিনে খেলতে চাওয়া ছিল তার নিজের, সংশয় ছিল অনেকের, তাই এই পজিশনে প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেকে। সময় অবশ্য খুব বেশি নেননি সেটির জন্য।
তিনে সাকিবের নিয়মিত খেলার শুরু গত বছর। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৭ সালে বিচ্ছিন্নভাবে দুটি ম্যাচে তিনে খেলে ভালো করতে পারেননি। গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে ব্যাট করতে শুরু করেন তিনে।
সেই টুর্নামেন্টে মোটামুটি সফল হন। পরে ভালো করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। কিন্তু গত এশিয়া কাপের সময় চোট নিয়ে ছিটকে যাওয়ার পর আবার জায়গা হারান তিনে। দল পরখ করে দেখে অন্যদের।
সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে আবার তিনে ফেরেন সাকিব। যথারীতি সফল এবারও। তিন ইনিংসের দুটিতেই করেন অপরাজিত ফিফটি। এরপর বিশ্বকাপের এই সাফল্য।
সব মিলিয়ে তিনে যতটুকু খেলেছেন, তার রেকর্ড ঈর্ষণীয়। ৮৩১ রান করেছেন ৫১.৯৩ গড়ে, এই পজিশনে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা গড়। ১৮ ইনিংসে ৮টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি এই সেঞ্চুরি, ১২১ রানের ইনিংসটি তিন নম্বরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটির পর সাকিব ফিরে তাকালেন তিন নম্বরে নামার সিদ্ধান্তের শুরুর দিনগুলোয়। জানালেন, নিজে সিদ্ধান্তটি নেওয়ার পর বোঝাতে হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের অনেককে।
“হ্যাঁ, আমারই ছিল (তিনের সিদ্ধান্ত)। সবাইকে বোঝাতে হয়েছে, সবাইকে। কারণ একটি ম্যাচে রান না করলেও তারা বলত যে পাঁচ নম্বরেই আমার খেলা ভালো। তিন নম্বরে খেলতে তাই অনেককে রাজি করাতে হয়েছে আমাকে।”
ব্যাট কথা বলতে শুরু হওয়ার পর অবশ্য কথায় আর কাউকে বোঝাতে হচ্ছে না। বরং তিনি উপভোগ করছেন এই নতুন চ্যালেঞ্জে, সেই চ্যালেঞ্জ জয়ের সাফল্য। এখনই সন্তুষ্ট না হয়ে দলে অবদান রাখতে চান আরও বেশি।
“এটা একটু আলাদা, ভিন্ন কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। তবে আমি এই মূহুর্তে উপভোগ করছি। আমার কাছে মনে হয়েছিল, আমার জন্য আরও বেশি অবদান রাখার সুযোগ এটি। ব্যাটে আরও বেশি অবদান রাখার সুযোগ।”
“তবে বলতেই হবে, এটা কেবলই শুরু। এই টুর্নামেন্টে এবং এরপরও আরও অনেক ম্যাচ আছে। আরও অবদান রেখে যেতে হবে। ব্যাটে-বলে আমি যতটা সম্ভব, আরও বেশি অবদান রাখতে চাই।”