তিনজন মিলে ধর্ষণের পর হত্যা করে সেই নার্সকে : পুলিশ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী বাসযাত্রী সেই নার্সকে তিনজনে মিলে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গতকাল রবিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুলাহ আল মামুন একথা বলেন।
তিনি বলেন, সেই নার্সকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আটক আসামিদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। মামলার প্রধান আসামি বাস চালক নূরুজ্জামান নূরু শনিবার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আল মামুনের খাস কামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু নিজেসহ তিনজন পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেছে। রিমান্ডে নেওয়ার পর চারদিনের মাথায় শনিবার নুরুজ্জামান স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
ডিআইজি বলেন, রিমান্ডে নেওয়া বাকি চার আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের আটকে সর্বাত্মক অভিযান চলছে। ধিকৃত এ ঘটনায় যারা জড়িত আছে, তাদের কেউ ছাড় পাবে না। অহেতুক যেন কাউকে হয়রানি না করা হয় এ ব্যাপারেও দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ডিআইজি চৌধুরী আব্দুলাহ আল মামুন আজ দিনভর ঘটনাস্থল বাজিতপুর ও কটিয়াদির বিভিন্ন স্পট পরদির্শন করেন। বিকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় তার সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুজ্জামান মিয়া, জেলার পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, নিহত নার্সের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে সিভিল সার্জন হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন। নিহত নার্সের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে সিভিল সার্জন হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন।
হাবীবুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তে নিহতের শরীরের ১০টি স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধস্তাধস্তির কারণেই এই জখম হয়েছে। তাছাড়া নিহতের যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণের আলামত ও পুরুষের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় ভিকটিমকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। “সবচেয়ে গুরুতর হচ্ছে শক্ত আঘাতের কারণে তানিয়ার মাথার পিছন দিকের খুলির হাড় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। এ আঘাতের ফলে ব্যাপক রক্ত ক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত সোমবার ঢাকা থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে করে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে বাড়ি ফিরছিলেন ২৩ বছর বয়সী ওই নার্স। রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে জামতলী এলাকায় কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের পাশ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে এলাকাবাসী। কটিয়াদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন।
এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উলেখসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন বাসচালক নূরুজ্জামান, চালকের সহকারী লালন মিয়া এবং রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া নামে তিন ব্যক্তি।