ঢাকায় নতুন করে ১২ এলাকা লকড ডাউন
নভেল করোনাভাইরাসের নতুন রোগী পাওয়ার পর ঢাকার ১২টি এলাকা লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার কেউ এখন বাইরে বের হতে পারবেন না, সেখানে কেউ ঢুকতেও পারবেন না।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে যে এলাকায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে, সে এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করার নির্দেশনা ইতোমধ্যে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাতে ছোঁয়াচে রোগটি আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
সংক্রমণের শুরুর দিকে ঢাকায় মিরপুরের টোলারবাগে রোগী পাওয়ার পর ওই এলাকাটি আগেই লকডাউন করা হয়েছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪১ জনের মধ্যে ২০ জনই ঢাকার বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মঙ্গলবার পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, আদাবর, বছিলা, বাড্ডা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ভবন লকডাউন করার ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
পুরান ঢাকায় খাজে দেওয়ান লেনে একটি মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও এক নারীর নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ায় ওই এলাকার দুইশ ভবন লকডাউন করা হয়েছে।
চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার মঙ্গলবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
বলেন, “যে মসজিদ কমিটির সহসভাপতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সমাজের চলাচল করেছেন এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন।
“ওই লেনের এক নারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই নারী বাহিরের যেতেন না। তাহলে নিশ্চয়ই তার স্বামী-সন্তান বাইরে থেকে এই ভাইরাস বাসায় এনেছেন।”
এই দুটি ঘটনায় খাজে দেওয়ান লেনে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে ধারণা করে ওই লেনের এক ও নম্বর দুই নম্বর গলি লকডাউন করা হয়েছে।
এই দুটি গলিতে আনুমানিক দুইশ ভবন রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, “আজ (মঙ্গলবার) বিকাল ৫টার পর থেকে কাউকে ঢুকতে এবং বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। কারও কিছু প্রয়োজন হলে পুলিশের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।”
পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার রোজ মেরিনার্স নামে একটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে বলে জানান বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোজ মেরিনার্স একটি মার্কেট, কিন্তু ওই মার্কেটের উপরে ৪০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটের ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য ওই ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।”
লালবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লালবাগের বড় ভাট মসজিদ রোডে একজন এবং নবাবগঞ্জ রোডে একজন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এজন্য বড় ভাট মসজিদ এলাকায় পাঁচটি বাড়ি এবং নবাবগঞ্জ এলাকার ক্রিসেন্ট ক্লাব গলি লকডাউন করা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর এবং আদাবরের ৬টি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে বলে জানান ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার রৌশনুল হক সৈকত।
তিনি বলেন, “আইইডিসিআর মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার কয়েকজনের করোনাভাইরাস পজেটিভ পায়। এরপরেই বাসাগুলো চিহ্নিত করে লকডাউন করা হয়।”
এরমধ্যে কৃষি মার্কেটের সামনে, তাজমহল রোড মিনার মসজিদ এলাকা, রাজিয়া সুলতানা রোড, বাবর রোড, বছিলা ও আদাবর এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও রাস্তা এখন লকড ডাউন।
এসব এলাকা ঘিরে লাল ফিতা, পতাকা লাগিয়ে চলাচলে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। ঘনঘন মাইকিং করা হচ্ছে।
এসব এলাকায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর বাড়ি ছাড়াও বাড়ির সামনের রাস্তা ও আশেপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সহকারী কমিশনার সৈকত।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উত্তর বাড্ডার খানবাগ রোডের এক ব্যক্তির শরীরে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপর ওই ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।”
এছাড়াও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এক নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সুদীপ বলেন, “ওই নারী যে ভবনে থাকতেন, সেটি লকডাউন করা হয়েছে। ওই ভবনে ৮টি পরিবার বসবাস করছে।”